পাকিস্তানি নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান মার্কিন রাষ্ট্রদূত
চৌত্রিশ বছরের বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক ক্যারিয়ার। পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কূটনৈতিক ক্যারিয়ারে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছেন। তবে এবার আদালতের প্রকাশিত নথিপত্রে সেই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের জীবনের একেবারে ভিন্ন দিক উঠে এসেছে। এক প্রতিবেদনে এসব তথ্যই তুলে ধরেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
বিভিন্ন অপরাধের বিষয় সামনে আসতেই শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড ওলসন। এসবের মধ্যে পাকিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিক মুনা হাবিবের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টিও রয়েছে।
দুবাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় দুবাইয়ের আমির থেকে শাশুড়িকে উপহার দিতে ৬০ হাজার ডলারের হীরার নেকলেস গ্রহণ করেন তিনি। তবে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামেন মার্কিন কর্মকর্তা। এ ছাড়া সাংবাদিক মুনা হাবিবের টিউশন ফি বাবদ পাকিস্তানি আমেরিকান ব্যবসায়ী ইমাদ জুবেরির কাছ থেকে ২৫ হাজার ডলার পাইয়ে দেওয়া নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।
ওলসনের জটিল রোমান্টিক জীবন নিয়েও তদন্ত হচ্ছে। ২০১২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে অবস্থানকালে তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। যদিও ওই সময় লিবিয়ায় নিযুক্ত আরেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গুপ্তচর দমন নিয়ম অনুযায়ী এসব বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা করেননি ওলসন।
সম্প্রতি দুই অপরাধের দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর একটি চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য ১৮ হাজার ডলারের প্রথম শ্রেণির টিকিট সম্পর্কিত এবং অন্যটি অবসরগ্রহণের পরও কাতারের হয়ে অবৈধ তদবির। তবে হীরার নেকলেস উপহার বা নারী সাংবাদিক মুনার টিউশনের অর্থের মধ্যস্থতা করার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়নি। মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, মার্কিন এই রাষ্ট্রদূতের এমন কর্মকাণ্ডে অনৈতিক আচরণের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
আজ মঙ্গলবারের ওলসনের সাজা হতে পারে। সাজা হিসেবে তাকে ছয় মাস পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হতে পারে। যদিও তার আইনজীবীরা বলছেন, তার দীর্ঘ ও সম্মানজনক কর্মজীবনের জন্য তাকে কারাদণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত।
পাকিস্তানি নারীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক
২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ওলসন। এ সময় তিনি সাংবাদিক মুনা হাবিবের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। দুই বছর ওলসনের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে সে সম্পর্কে ইতি টানেন মুনা। সম্পর্কে ইতি টানলেও একে-অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যলয়ে পড়াশোনার ব্যাপারে মুনাকে সহায়তা করেন তিনি।
বর্তমানে মুনা ও ওলসন স্বামী-স্ত্রী। ওলসনের সঙ্গে বিয়ের আগে সম্পর্কটি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সাংবাদিক মুনা।