Home দুর্ণীতি রাজধানী রণক্ষেত্র, গয়েশ্বর ও আমান আটক, ছবি তুলত বাধা
জুলাai ২৯, ২০২৩

রাজধানী রণক্ষেত্র, গয়েশ্বর ও আমান আটক, ছবি তুলত বাধা

বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের বাধাকে কেন্দ্র করে রাজধানী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ঢাকার ধোলাইখাল, উত্তরা ও মাতুয়াইলে পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমানুল্লাহ আমানকে আটক করেছে পুলিশ। রাস্তায় ফেলে বেদম প্রহার করা হয় গয়েশ্বরকে। ছবি তুলতে বাধা দেয়া হয় সাংবাদিকদের।বেলা একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মাতুয়াইল ও উত্তরায় সংঘর্ষ চলছিল।

পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহত ব্যক্তির মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রয়েছেন।

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে আজ বেলা ১১টা থেকে ৫ ঘণ্টার ‘অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। বিকেল চারটা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলার কথা।

প্রতিটি জায়গায়  সাংবাদিকেরা রয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গাবতলী, উত্তরা, নয়াবাজার ও শনির আখড়া এলাকায় এই অবস্থান কর্মসূচির আগে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। বেলা ১১টার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।

পুরান ঢাকার ধোলাইখালে বেলা ১১টার পরে কয়েক শ বিএনপির নেতা-কর্মী লাঠিতে জাতীয় পতাকা বেঁধে সড়কের এক পাশে অবস্থান নেন। তাঁরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।

বিএনপির এই কর্মসূচি পালনের কথা ছিল পুরান ঢাকার নয়াবাজারে। তবে সেখানে আজ সকাল থেকে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যও সেখানে মোতায়েন করা হয়।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা নয়াবাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ধোলাইখাল এলাকায় অবস্থান নেন। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধোলাইখালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রথমে পুলিশের ধাওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পিছিয়ে যান। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘটিত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেন।

ঘটনাস্থলে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালামসহ অন্য নেতারা ছিলেন। তাঁরা নেতা-কর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তা সম্ভব হয়নি।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে বেদম প্রহার করে পুলিশ। পরে তাঁকে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে যায় এবং তারপরে তাঁকে একটি পুলিশ ভ্যানে করে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সর্বশেষ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ধোলাইখালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।

ঢাকার উত্তরায়ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১১টার কিছু পরে বিএনপির নেতা-কর্মী উত্তরার বিএনএস সেন্টারের কাছে জড়ো হন। তাঁদের পুলিশ সরে যাওয়ার জন্য বলে। কিছুক্ষণ পরে বিএনপির আরও নেতা-কর্মী সেখানে যান।

একপর্যায়ে তাঁরা রাস্তার মাঝখানে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তখন তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ হয়। তারপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে এবং ধাওয়া দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা পিছু হটে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নেন। সেখান থেকে তাঁরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেয়।

বেলা ১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত। পুলিশ বিএনএস সেন্টারের সামনে অবস্থান করছিল।

পুলিশ দাবি করেছে, যে তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার কারণে। এদিকে যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শরীফুল ইসলাম খান ঘটনাস্থলে আহত হন। একটি স্প্লিন্টার তাঁর শরীরের আঘাত করে।

যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার তারিকুল ইসলাম বলেছেন, ভিডিও করার কারণে পুলিশ তাঁর মুঠোফোন নিয়ে গেছে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *