উদ্যোক্তা হিসেবে আরো এক ধাপ – স্বপ্ন যখন বাস্তবে রুপ দিলেন রিদন
শাহরিয়ার রিদন নামটি এখন আমেরিকার পশ্চিমা রাজ্যগুলোর ব্যবসায়ীদের কাছে এখন এক পরিচিত নাম। একজন তরুণ এবং চতুর্মুখী উদ্যোক্তা যিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অগ্রগতিশীল ব্যবসায়িক বিশ্বে সফলতার সাথে স্বাক্ষরতা রেখে চলেছেন। তার উদ্যোক্তা হিসেবে পথচলা আজ দেশে-বিদেশে অনেক উদ্যোক্তার জন্যে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে।
শাহরিয়ার ছোট একটি লক্ষ্যে কাজ শুরু করলেও তার স্বপ্ন ছিলো সমাজে একটি ইতিবাচক প্রভাব রাখা। আমেরিকার বেশীরভাগ পণ্যই মূলত চায়নাতে প্রক্রিয়াজাতকরণ হয়। শাহরিয়ার বুঝতে পারেন, চায়নার বাইরে যে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র রয়েছে এবং সেটি খুব ভালোভাবেই প্রক্রিয়াজাতকরণ বাণিজ্যে সক্ষম সেটা বেশ কিছু বড় অংগরাজ্যের ব্যবসায়ীরাই জানে না।
সেইসাথে আপওয়ার্ক এবং ফাইভার এর মতো ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিক অ্যাপগুলোর ১৬ শতাংশ কাজই বাংলাদেশী প্রফেশনাল রাই করে থাকেন। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই মূলত শাহরিয়ারের এগিয়ে যাওয়া। এই মূহুর্তে তার টুইনক (TwinC) নামক মাল্টিমিলিয়ন ডলার কোম্পানি কয়েকটি ইউনিকর্ণ কোম্পানির পাশাপাশি ছোট এবং মাঝারি কোম্পানির সাথে ব্যবসা সম্প্রসারণ নিয়ে কাজ করে চলেছে। সম্প্রতি শাহরিয়ারের সফটওয়ার ভেঞ্চুর নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ এনলিস্টেড একটি কোম্পানির ফাউন্ডিং বোর্ড মেম্বারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
শাহরিয়ার মাত্র ১৫ হাজার টাকা নিয়ে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালে আমেরিকাতে পাড়ি জমান। অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও, তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমেরিকায় তিনি ক্যামিক্যাল প্রকৌশল এর পাশাপাশি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ব্যবসা নিয়ে পড়াশুনা করেন।
সম্প্রতি তিনি স্ট্যানফোর্ড সহ আরো বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার অফার পেয়েছেন। শাহরিয়ারের নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্থা তাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তার দৃঢ়প্রত্যয়ী এবং ত্যাগী মনোভাব তাকে উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছে। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি সবসময়ই চেয়েছি নিজের দেশকে নিয়ে কিছু করতে। আমাদের হয়তো অনেক সমস্যা কিংবা দুর্বলতা রয়েছে কিন্তু সেটা কখনোই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে অজুহাত হতে পারেনা।”
সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি শাহরিয়ার সক্রিয়ভাবে তরুণ উদ্যোক্তাদের পরামর্শ এবং সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এভাবেই তিনি তার লিগাসী সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে পারবেন।
শাহরিয়ারের উদ্যোক্তা হিসেবে পথচলা ব্যবসায়িক বিশ্বে আজ অনেকের কাছেই পথিকৃৎ হয়ে দাড়িয়েছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে একবেলা খেয়ে বেড়ে ওঠাদের তিনি একজন। তার উদ্যম, পরিশ্রম, ত্যাগ দিয়ে হলেও তিনি লক্ষ্য এবং দূরদর্শিতা বজায় রেখে কাজ করে চলেছেন যেটা অনেকের জন্যে শুধুমাত্র স্বপ্ন। শাহরিয়ার বিশ্বাস করেন, এই পৃথিবীতে তার কর্তব্য মূলত তিনটি; মাতাপিতার সেবা, স্রষ্টার সেবা এবং মানবজাতির সেবা করা।