দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করুন
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করুন। আমরা সব সময় আপনাদের পাশে আছি।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে ব্যবসায়ী সম্মেলন’-এ প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। সরকারপ্রধান ব্যবসায়ীদের উদ্ভাবনী ধারণা কাজে লাগিয়ে রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার ও পণ্য খুঁজে বের করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এ জন্য সরকার সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবে। শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা সব সময় দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভাবি। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে সরকার সবাইকে সুযোগ দিয়েছে যা, দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর।
সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেছেন, নির্বাচন এলেই বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে এবং স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আপনি যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে আসছেন ও আমাদের (ব্যবসায়ীদের) যে অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে ধরে রাখার জন্য আপনাকে প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের বিদ্যমান সমস্যাগুলো আপনার মাধ্যমে আমরা সমাধান করতে চাই। এ জন্য সব ব্যবসায়ী ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আপনাকে আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে।’
উত্তরাঞ্চলের বাণিজ্য সম্ভাবনার ফিরিস্তি তুলে ধরে এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, দেশীয় শিল্পের বিকাশ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। ফলে পরিবর্তনশীল বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে আধুনিকতার উৎকর্ষে বদলে যাবে বাংলাদেশ। আমি মনে করি সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব। সে জন্য শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার।
ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, সাত সাগর আর তের নদীর ওপর থেকে মানুষ এসে সব পরিবর্তন করে দেবে, তা হবে না। এখন সরকার পরিবর্তন হলে সব চলমান প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। তত্ত্বাবধায়ক, নিরপেক্ষ বুঝি না-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনাকে দেখতে চাই।
এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এনেছেন। স্থিতিশীলতাই সমৃদ্ধি এবং শান্তি আনে। এ জন্যই বলি শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার। বিকেএমইএ সভাপতি ও সংসদ-সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য আবারও আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পেলে বাঙালি জাতির আর কোনো দুঃখ থাকবে না।
টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, আপনি এনালগকে দেশকে ডিজিটালে রূপান্তর করেছেন। আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য আপনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিজিএমইএ পরিবার আপনার সঙ্গে থাকবে। এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, নির্বাচন এলেই কাদের যেন আনাগোনা শুরু হয়। নাগিনীর বিষাক্ত নিশ্বাস কানে ভেসে আসে। বাংলাদেশের মাটি, মানুষের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র আমরা মেনে নেব না, প্রতিরোধ করব।
আপনার প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে থাকব। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা দেশের ৬৪টি জেলায় ব্যবসায়ী সম্মেলন করে দেশের উন্নয়ন তুলে ধরতে চাই। বেসিসের সভাপতি কামরান টি. রহমান বলেন, শুধু আপনার নেতৃত্বই চাই। আগামীতে আপনার নেতৃত্বে আমরা সারা দুনিয়া জয় করব।
বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার উল আলম পারভেজ, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন, মীর নাসির, আব্দুল মাতলুব আহমাদ, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।