Home কৃষি ও প্রকৃতি বগুড়ার শাজাহানপুরে কাজুবাদাম চাষিদের ব্যাপক আগ্রহ
জুন ১৯, ২০২৩

বগুড়ার শাজাহানপুরে কাজুবাদাম চাষিদের ব্যাপক আগ্রহ

শাজাহানপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা : দেশের সম্ভাবনাময় ও অর্থকরী ফসল কাজুবাদাম এখন চাষ হচ্ছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সমতলভূমিতে। উপজেলার খোট্রাপাড়া গ্রামের মোতাসিম বিল্লাহ ঢাকা কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স (বিএসএস) শেষ করে এসেনসিয়াল ড্রাগস-এ কিছু দিন চাকরি করেন। চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান সিঙ্গাপুর। সেখান থেকে ফিরে এসে বাবার জমিতে শুরু করেন বিভিন্ন ফল ও ফুলের চাষাবাদ। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ধান আবাদের পাশাপাশি তিনি নিজের জমিতে মাল্টার বাগান গড়ে তোলেন। পাশাপাশি তিনি কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২০২১ সালে আগষ্ট মাসে ৫০ শতাংশ জমিতে এম-২৩ জাতের ৮০টি কাজুবাদামের কলম চারা রোপণ করেন।

সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, পানিবদ্ধ পতিত জমিতে মাটি ভরাট করে কাজুবাদামের বাগান গড়েছেন কৃষক মোতাসিম বিল্লাহ। বাগান ঘুরে দেখা যায়, গাছে গাছে এক সাথে ফুল ও ফল ঝুলছে। চলছে পরিচর্যার কাজ। প্রতিদিনই অনেকে আসছেন কাজুবাদামের গাছ ও তার ফল। পাহাড়ী অঞ্চলের এই কাজুবাদাম পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে সফল হওয়ায় ব্যাপক সম্ভাবনাময় বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। আগামীতে হতে পারে উপজেলার অন্যতম লাভজনক চাষ। স্থানীয় একাধিক কৃষকরা জানান, কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা পেলে তারাও আগামীতে কাজুবাদামের চাষ করবেন। কৃষক মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ‘কাজুবাদাম ও কফি চাষ গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের প্রশিক্ষণ শেষে এম-২৩ জাতের কাজুবাদামের ৮০টি কলম চারা ৫০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেছিলেন। এর মধ্যে ৬০টি চারা টিকে যায় এবং এবং তা দ্রুত বাড়তে থাকে। গতবছর গাছে গাছে কাজুবাদামের মুকুল ধরলেও ফল ধরেছিল কম। তবে এবার প্রতিটি গাছে প্রচুর ফুল ও ফল ধরেছে। এর মধ্যে কয়েকটি গাছে চার থেকে পাঁচ কেজি বাদাম হবে। ইতিমধ্যে বাগান থেকে বেশ কিছু ফল তোলাও হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক কিভাবে প্রক্রিয়াজাত করা যায় তা শিখে নিয়েছেন। খুব শিগগিরই তিনি এই সুপার ফুড বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন বলে মনে করেন। তিনি নতুন উদ্যাক্তাদের উদ্দেশে বলেন বাংলাদেশের মাটি আসলে সোনার মত। এখানে যা ফলাবেন তাই ফলবে। শুধুমাত্র উদ্যোগের প্রয়োজন। এখন সময় এসেছে বাণিজ্যিকভাবে কাজু বাদামের মত অপ্রচলিত খাদ্যপণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করার। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আখতার রওজেয়ারা রোজী জানান, কাজুবাদাম মূলত পাহাড়ী ফসল। কাজুবাদাম ও কফি চাষ’ গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার খোট্টাপাড়া ব্লকের মোতাসিম বিল্লাহকে ২০২১ সালে ৮০টি চারা দেয়া হয়। এরমধ্যে ২০টি চারা নষ্ট হয়ে যায়। গাছগুলোতে এবছর ফুল ও ফল এসেছে। কাজু বাদাম ও এর উপরের কাজু আপেল বেশ সুস্বাদু ফল । দুটোই খাওয়া যায়। এটি বেশ লাভজনক ফসল। তিনি আরও জানান, কাজু বাদাম গন্ধ ও স্বাদে মিষ্টি জাতীয়।

ওজন হ্রাস, রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যকর হৃদয় গঠন, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধ, ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় এটি এক দারুণ পুষ্টিকর খাবার। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হলে এটি স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে রফতানি করা যেতে পারে বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা। উপজেলা কৃষি অফিসার আমিনা খাতুন জানান, সমতলভূমিতে কাজুবাদাম ও কফি গবেষনা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কাজুবাদাম চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। যে কারণে সরকারিভাবে এখন ব্যাপক ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকদের কাজুবাদাম চাষে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। যদিও এসব অপ্রচলিত বিদেশি ফল চাষের জন্য কৃষিবিভাগ সবসময় গবেষণা করে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকে নিরলসভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন দেশের কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে। এ জন্যই সরকারিভাবে এ নির্দিষ্ট জায়গায় নিদৃষ্ট কৃষককে বিনামূল্যে চারা দেয়া হয়েছে, প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষিতে সম্ভাবনাময় ও অর্থকরী ফসল কাজু বাদাম। বাংলাদেশে কাজু বাদামের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে এই ফসলটি হতে পারে দেশের

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *