Home অপরাধ পাইকারিতে কমলেও খুচরায় প্রভাব নেই
জুন ১৭, ২০২৩

পাইকারিতে কমলেও খুচরায় প্রভাব নেই

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা বাজারে প্রভাব নেই। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। যা এখনো কেজিপ্রতি ৬০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা ‘আগের কেনা পেঁয়াজ’ বলে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। আর খুচরা বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকার বেশি দামে। পাইকারি বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা দরে।  একইভাবে চিনির দাম আগের মতোই ঊর্ধ্বমুখী। বড় শিল্প গ্রুপ চিনির বাজার নিয়ে খেলছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে সবজির দাম কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম যেভাবে কমবে আশা করা হয়েছিল, পাইকারিতে দাম সেভাবেই কমেছে। তবে খুচরায় ততটা কমেনি। কারণ, প্রথম দফায় আসা পেঁয়াজের মান অতটা ভালো ছিল না। এজন্য বাজারে প্রভাব রাখতে পারেনি। এখন যে পেঁয়াজ আসছে, তা বেশ ভালোমানের।

তাতে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে। কুরবানির আগে আর দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

মাস দেড়েক পেঁয়াজের দাম অস্থির থাকার পর সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। এরপর পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দর কমতে শুরু করে। ১৫ দিন আগেও বাজারে ৯২ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় পেঁয়াজ।

ক্ষেত্র বিশেষে তা ১০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হয়েছিল। পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজ সংকটকে পুঁজি করে এরইমধ্যে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভোক্তার পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কেজিপ্রতি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা বাড়িয়ে দিয়ে মোটা অঙ্কের মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৯০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছিল।

সরেজমিন দেখা যায়, ১ সপ্তাহ আগে পাইকারিতে ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৩৫-৪০ টাকা কমেছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। ২ দিনের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে ১৫ টাকা কমে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে ৩ টাকা কমবেশি রয়েছে। তবে খুচরা বাজারে এখনো সেভাবে আমদানি করা পেঁয়াজ পৌঁছায়নি। কিছু কিছু বাজারে সরবরাহ থাকলেও এসব পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২ দিনে পাইকারি বাজারে প্রচুর ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকেছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে আগের কেনা দেশি পেঁয়াজ থাকায় তারাও ভারতীয় পেঁয়াজ কিনছে না। তবে কিছু কিছু বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ যাচ্ছে। এতে মসলাজাত পণ্যটির দাম অনেক কমেছে। সরবরাহ বাড়লে এর দাম আরও কমে আসবে।

চকবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সাধন দাশ জানান, কয়েকদিনে পেঁয়াজের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। কিন্তু আমাদের পেঁয়াজগুলো আগের কেনা। তিন দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলাম কেজিপ্রতি ৮৫-৯০ টাকায়। আজ বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০-৬৪ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫৮-৬০ টাকা করে। তবে আমাদের এখানে দাম কমলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা আগের দামে বিক্রি করছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, চিনির দাম এখনো স্থিতিশীল হয়নি। চিনি আমদানিকারকরা কোনো কারণ ছাড়াই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। খাতুনগঞ্জে কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি মনে (৩৭.২৩৭ কেজি) চিনির দাম বেড়েছে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতি মন চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকা। যা ৪ দিন আগেও ছিল ৪ হাজার ৫০০ টাকার কাছাকাছি।

এদিকে সবজির দামও আকাশচুম্বী। তবে ক্রেতারা বলছেন, চিনির বাজারে প্রশাসনের কোনো ধরনের নজরদারি নেই। যার ফলে ব্যবসায়ীরা কিছুদিন পরপর ইচ্ছেমতো দাম বাড়ান।

মে-র মাঝমাঝি সময়ে সরকার চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয়। সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়, বাজারে চিনির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখা, সাধারণ ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) কর্তৃক প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনি (খোলা) মিলগেট মূল্য ১১৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১১৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১২০ টাকা। প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনি (প্যাকেট) মিলগেট ১১৯ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১২১ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১২৫ টাকা নির্ধারণ করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এ দামে চট্টগ্রামের কোথাও চিনি বিক্রি হচ্ছে না।

খাতুনগঞ্জের চিনির পাইকারি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, বড় শিল্প গ্রুপ চিনির বাজার নিয়ে খেলছে। তারাই চিনির বাজারকে অস্থিতিশীল করে রাখছে। যাতে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে পারেন।

বাজারদর : চট্টগ্রামে বেড়েছে সবজির দামও। কম দামের সবজি হিসাবে পরিচিত আলুর দামও বেড়েছে।
প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা দরে। প্রতি কেজি বরবটি ৬০, বেগুন ৬০, চিচিঙ্গা ৭০, পটোল ৬০, লাউ ৪০, পেঁপে ৪০, লতি ৫০, ধুন্দল ৯০ ও টমেটো ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে প্রতি কেজি শিং ৩৫০, রুই ২৫০, শোল মাছ ৬০০, কোরাল ৭০০, চিংড়ি ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাতলা ৩০০ থেকে ৩২০, পাঙাশ ২২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা ৪০০, টেংরা ৪৫০, শিং ও সমুদ্রের কোরাল ৫০০, কই ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১৫ থেকে ২২০, কক ৩৪০ ও পাকিস্তানি লেয়ার ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ এবং খাসি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *