Home জেলা রাজনীতি খালেদা জিয়ার বিষয় আমাদের অভ্যন্তরীণ, বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয়: কাদের
জুন ১৪, ২০২৩

খালেদা জিয়ার বিষয় আমাদের অভ্যন্তরীণ, বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয়: কাদের

খালেদা জিয়ার বিষয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ, এ বিষয়ে দেশের বাইরে কোনো হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোড সেফটি-বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে একটি চিঠি লিখেছেন। গত সোমবার তাঁরা ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং চলমান সংকটের টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধানের জন্য বিএনপিসহ অন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনার কথাও বলা হয়। আজ সেই বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই বিচার কার্যক্রম যখন শুরু হয়েছে, তখন অহেতুক বিলম্ব, প্রলম্বিত করা, অনুপস্থিত থাকা বিচারকার্যকে বিলম্বিত করেছে। তারা খালেদা জিয়ার জন্য কিছু করতে পারেনি এবং বাইরে তেমন কোনো আন্দোলন বাংলাদেশের রাজপথে করতে পারেনি যে তাতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিষয়টি আমাদের আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখছেন। তাঁরাই উচ্চপর্যায়ে কথা বলছেন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কারও অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। অন্যান্য দেশে ডেমোক্রেসি আছে, নির্বাচন হচ্ছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের ৬ জানুয়ারি ডেমোক্রেসির নামে যা হলো, আমরা তো সেটা নিয়ে প্রশ্ন করিনি। ছয়টি প্রাণ ঝরে গেল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাই মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, বাস্তবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিছু না কিছু ত্রুটি আছে। আমরাও আমাদের গণতন্ত্রকে পারফেক্ট বলব না। আমাদের গণতন্ত্রকে আমরা ত্রুটিমুক্ত করার জন্য চেষ্টা করছি।’

বিএনপি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘গাজীপুরের নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেনি। বরিশাল ও খুলনায় নির্বাচন হলো। কক্সবাজারে নির্বাচন হলো, অত্যন্ত কঠিন জায়গা। আপনি কতটা জনপ্রিয়, প্রমাণ করতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে।’

কাদের আরও বলেন, ‘এক হাজার লোকের একটা মিছিল বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা দেখিনি।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতাদের পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

জামায়াত প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপারটা উচ্চ আদালতে আটকে আছে। সরকার তো এখানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যেহেতু সেখান থেকে কোনো নির্দেশ আসেনি।

বিএনপি জামায়াতকে আবার মাঠে নামিয়েছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কি হিউম্যান রাইটসের আদর্শে চলি? তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আমরা চলি? আমাদের উন্নয়ন, আমাদের উন্নতি, আমাদের সমৃদ্ধি, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ,  আমাদের এখনকার স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনা কি তাদের কথায় করি? আমরা তো এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা তো আমাদের দেশটার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন বাইরের বিষয় নানান হস্তক্ষেপ থাকে। এটার নানান কারণে থাকে। আমার মনে হয় প্রত্যেকেরই নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখা উচিত। কারও চাপে নতি স্বীকার করি না, করব না।’

এর আগে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংককে না পাওয়া সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভুল–বোঝাবুঝি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক ইচ্ছা করলে পদ্মা সেতুতে জড়িত থাকতে পারত। এখানে একটা ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। তবে এ জন্য শুধু বিশ্বব্যাংককে দায়ী করা যাবে না; এর সঙ্গে আমাদের দেশের বাঘা বাঘা ব্যক্তিও জড়িত ছিল। এটা বড় ভুল–বোঝাবুঝি।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে এ দেশে কিছু সমস্যা হয়, সে বাস্তবতা স্বীকার করতেই হবে। ঘাটে ঘাটে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এতে কষ্ট বাড়ে, সময়‌ও বাড়ে। এই প্রজেক্টে অংশীদার হওয়ায় বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান তিনি।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের (পরিবহন) প্র্যাকটিস ম্যানেজার ফেই ডেং। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে সড়কের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অপরাধ ও অপারেশন) মো. আতিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *