Home সারাদেশ দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় অপ সাংবাদিকতার অন্তরালে পেশাদার সাংবাদিকদের মান ক্ষুন্ন
2 hari ago

দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় অপ সাংবাদিকতার অন্তরালে পেশাদার সাংবাদিকদের মান ক্ষুন্ন

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট :

দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় হলুদ সাংবাদিক ভুয়া সাংবাদিকের অত্যাচার দিনদিন বেড়েই চলছে। দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার বাগেরহাট সহ প্রত্যেকটি জায়গায় মানুষের নৈতিক দায়িত্ব না থাকার কারণে কথিত সাংবাদিকেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য। তথাকথিত আইপিটিভি (ইউটিউব), অনলাইন নিউজপোর্টাল ও যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, প্রেস লেখা স্টিকার, আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছে ওইসব সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তি। অথচ তাদের কোনো অনুমোদন নেই, নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা পরির্বতন করেই হয়ে যান সাংবাদিক,
মাছের পোনা বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, মুদি দোকানদার, হলুদ মরিচ বিক্রেতা, সুদের কারবারি, ব্যাটারি বিক্রেতা, ডাক্তারের সহকারী থেকে রাতারাতি সাংবাদিক হয়ে দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার অলিতে গলিতে এই নামধারী সাংবাদিকরা।
কোন নিউজ লিখতে না পারলেও তারা বড় সাংবাদিক, গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কথিত এই সাংবাদিকরা।
বাল্যবিবাহ, মারামারি, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, পরকিয়া,মেম্বারের অনিয়ম ছাড়া অন্যকোন জনস্বার্থের সংবাদে এই সাংবাদিকদের দেখা মিলে না।
তারা শুধু ইউটিউব ও ফেসবুকে একটি প্রোফাইল তৈরি করে সেটিকে টিভি চ্যানেল অথবা নিউজপোর্টাল হিসেবে ঘোষণা করে প্রচার করে হচ্ছে। এমনকি নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সঙ্গে জড়িতরাও সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে সর্বত্র। এ ছাড়াও শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা সংবাদ লিখতে না জানলেও নামসর্বস্ব কিছু পত্রিকার কার্ড কিনে রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে সাংবাদিক। গত এক বছর যাবৎ ভুয়া সংবাদকর্মীদের তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে এরা যেখানে-সেখানে অবাধে বিচরণ করছে এরকম কয়েকশ ভুয়া সাংবাদিক। করে যাচ্ছে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড। এসব নীতিহীন কর্মে বাড়ছে গুজব, অপপ্রচার, বিভ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

বাগেরহাটের একজন পেশাদার সাংবাদিক বলেন, এদের জন্য সমাজে এবং জাতির কাছে পরিপূর্ণ ভাবে আমাদের ভাব মূর্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেউবা আবার আমাদের  প্রেসক্লাবের নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে মাসোহারা নিয়েও চলে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রেস কার্ড ব্যবহারকারী অনেকেই আছে বিভিন্ন কর্মসংস্থান থেকে সাংবাদিকের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধমকিও দিয়ে  আসছে, যারা নিজের নামটাও ভালো করে লিখতে পারে না।

কেউ বা হকার ও ঘড়ি মেকানিস, টিভির মেকানিস, অটোচালক, বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকে সাংবাদিকতার মতো একটি মহোৎ পেশায় নাম লিখায়। এক শ্রেণীর সম্পাদক রয়েছেন যারা কোন সাংবাদিকের মাধ্যমে ৫০০ অথবা ১০০০ টাকার বিনিময়ে অযোগ্য সেই মূর্খ মানবদের আইডি কার্ড প্রদান করে থাকেন। এতে দেখা যাচ্ছে সমাজের বহু জায়গায় পেশাদার সাংবাদিকদের পরিচয় দিতে আত্ম সন্মানে লাগে এবং কষ্টকর হয়ে পড়ে।সমাজের চিহ্নিত অপরাধীরা এখন সাংবাদিকতা পেশা কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন অনেক নেতাকর্মীর নাম বিক্রি করে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হচ্ছেন।গত কয়েক মাসে দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কয়েকজন মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন আবার বাল্যবিবাহতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়েছেন অনেকে, এসব সাংবাদিকরা জেলখেটে আবার সাংবাদিকতা শুরু করেছেন করে যাচ্ছেন নানা অপকর্ম।
গ্রামে গঞ্জে তাদের ভিজিটিং কার্ডে সয়লাব, নামধারী মানবাধিকার সংগঠন, ভুঁইফোড় অনলাইনের কার্ডের নাম লিখে ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে গ্রামের মানুষদের ব্লাকমেইল করে যাচ্ছেন তারা।
ভোলা নতুন বাজার থেকে সৃষ্টি হওয়া এসব সাংবাদিকরা নিউজ তো ভালো কথা নিজের জীবনবৃত্তান্ত ও ভালো করে লিখতে পারবে না বলে জানান বাগেরহাটের  আশির দশকের এক সাংবাদিক কিন্তু তাদের দাপটে আজ মূলধারার সংবাদকর্মীরা অসহায় বলেও জানান তিনি।
তাদের এরকম কর্মকাণ্ডের ফলে মূলধারার সাংবাদিকদের বিব্রতকর অবস্থা ছাড়াও মাঝেমধ্যে পড়তে হচ্ছে ঝুঁকির মুখে। এমন বাস্তবতায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি। ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে এই ভুয়া সাংবাদিকদের এখনই নিয়ন্ত্রণ করার দাবি সচেতন মহলের।
দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাটে কর্মরত দেশের বহুল প্রচারিত কয়েকটি মিডিয়ার প্রতিনিধি ও জেলার সিনিয়র সাংবাদিকরা জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজি ও নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে কার্ডধারীরা। এ ধরনের ভুঁইফোঁড় কথিত সাংবাদিকরা বাগেরহাটের  বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ি, মিল-কারখানা, বেকারিসহ নানা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখিয়ে করছে চাঁদাবাজি। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে কোনো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা শুনলেই বুম হাতে কিংবা আইডি কার্ড ঝুলিয়ে উপস্থিত হয় সেখানে। এরপর নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে জাহির করতে করে নানা অঙ্গভঙ্গি। অনুষ্ঠান শেষে রাজনৈতিক নেতা কিংবা আয়োজকদের পেছনে পেছনে ছোটে মৌমাছির ঝাঁকের মতো। তারা নিজেরাই বিভিন্ন স্থানে গড়েছে প্রেসক্লাবসহ নামে-বেনামে সংগঠন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, মূলধারার কিছু সাংবাদিক, থানা পুলিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে সখ্য রয়েছে তাদের। অপকর্মে জড়িতদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমন প্রত্যাশা দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায়  মূলধারার সাংবাদিকদের।

কিছু লোক আছে এখনো পেশাদার সাংবাদিকদের  নাম বিক্রি করে চলে, তাদের মধ্যে এমনও জানা গেছে দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় হকার ও ফুটপাতে চায়ের দোকানদার বর্তমানে এড়াও নাকি সাংবাদিক।

অপর একজন পেশাদার সাংবাদিকের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, ভুয়া সাংবাদিকের অত্যাচারে আমরা পেশাদার সাংবাদিকেরা পরিচয় দিতেই ভয় পাই। এদের ঠেকানোর মতো কোনো লোক কি নেই দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায়? পেশাদার ও যোগ্যতা সম্পন্ন সাংবাদিকদের আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে সমাজটাকে গোছানোর জন্য আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। হলুদ সাংবাদিক ও মূর্খ সাংবাদিক যারা বলে এবং কথায় কথায় গলায় আইডি কার্ড ঝুলিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চলে এদেরকে যেকোনো পরিস্থিতিতে ঠেকাতে হবে। এরা কোথাও পরিচয় দেয় আমরা ক্যামেরাম্যন, সাংবাদিকদের সহযোগী, সাংবাদিকদের সোর্স, সহযোগী সোর্স এর কোন আইডি কার্ড লাগে না।

সুশীল সমাজের লোকদের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন, ভাই পেশাদার সাংবাদিক আমাদের সমাজে ভালোভাবে চলুক আর ভুয়া সাংবাদিক আইডি কার্ড ব্যবহারকারী সাংবাদিক নিপাত যাক। মূর্খ লোক সাংবাদিকতা পেশায় থাকলে পেশাদার সাংবাদিকের জন্য লজ্জাজনক ও দুঃখজনক।(এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির)
বাগেরহাট সংবাদদাতা                     
০১৯১১২১১৯৬৫/০১৭১১৩৭৭৪৫০
তারিখ–২৩.১২.২০২৪

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *