Home সারাদেশ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দখলকৃত নদী উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন।
Oktober ১৯, ২০২৪

মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দখলকৃত নদী উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন।

বালী তাইফুর রহমান তূর্য, নলছিটি  প্রতিনিধি :
ঝালকাঠির নলছিটিতে কুমারখালি মরানদীতে(মরগাঙ্গী) দেয়া বাধ কাটার ঘটনায় জেলেদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবৈধভাবে দখল করে রাখা মরানদী জেলেদের মাছ ধরার জন্য ফের উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় জেলে জনগোষ্ঠী ও সাধারণ নাগরিকরা।
আজ বুধবার ১৬ অক্টোবর সকাল দশটায় উপজেলার কুমারখালি এলাকায় এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
এসময় বক্তারা অভিযোগ করেন এই নদীর এই শাখাটিকে আদালতের রায়ের নামে অবৈধভাবে দখল করে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন যাবত।একটি দখলদার চক্র রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নদীতে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে এসেছে।এরফলে এলাকার খালগুলোর পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে কৃষি,মৎস চাষ বন্ধ হয়ে যাওয়া সহ দৈনন্দিন কাজের ব্যবহৃত পানিও পাওয়া যেত না দীর্ঘদিন পর্যন্ত।যেকারণে নদীর তীরবর্তী অন্তত পাচটি গ্রামের কৃষি খাত ধীরে ধীরে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।বাধের কারনে পানি প্রবাহ না থাকায় এলাকার খাল,পুকুরগুলোতেও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যেত না।আওয়ামী লীগের আমলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ব্যক্তিগত মালিকানা রেকর্ডের জমিও উচ্চ আদালতের ইজারার আদেশের নামে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিলো।
এরফলে কুমারখালি এলাকার জেলে,নাইয়া এবং দাঈ সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ দিনে দিনে মূল পেশা থেকে কর্মহীন বেকার হয়ে পরে।ফলে তাদের অর্থনৈতিক দুর্দশা দিনে দিনেই বেড়ে গিয়েছে।
গত ০৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তনের পরে স্থানীয় জেলেরা নদীতে ফের মাছ ধরা শুরু করেন।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দখলদাররা আদালতে বেশ কয়েকজন জেলের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।এর প্রেক্ষিতে জেলেদেরকে প্রতিনিয়ত অযথা পুলিশি হয়রানিতে ভুগতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এসময় সেই মামলায় জড়িয়ে দেয়া ভুক্তভোগী জব্বার খান জানান আমরা গরীব দিনমজুর,কোনোমতে দিন আনি দিন খাই।অথচ মিথ্যাভাবে আমাদেরকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।নদীর বাধ ভেঙে গেছে অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে এবং বন্যায় কিন্তু দখলদাররা আমাদেরকে অযথা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।এই নদীর বাধ ইতোপূর্বেও অনেক বার ছুটে গিয়েছিলো।আমরা ভাত খাবার পয়সাই জোগাতে পারি না,মামলার টাকা দেব কোথা থেকে।তাই আমরা এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নদী উন্মুক্ত করার দাবি জানাই।
এছাড়াও বক্তারা অভিযোগ করেন,এই নদীতে অনেক লোকের রেকর্ডীয় সম্পত্তি রয়েছে।রাস্ট্র বা আদালত তা কিভাবে কাউকে ইজারা দিতে পারে।বরাবরই আমাদের সন্দেহ ছিলো যে এখানে আদালতের রায়ের নাম ভাঙিয়ে কোন জাল কাগজপত্র বানিয়ে তারা অবৈধভাবে এই নদীকে দখল করে রেখেছে।কেননা তারা সেই রায়ের কাগজ কখনও কাউকে দেখাতে চাননি।
বিগত দিনে সাবেক সাংসদ আমির হোসেন আমুর ঘনিষ্ঠ মোস্তাক নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় নদীতে অবৈধভাবে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করা হতো।আর এর ফলে সেখানে অন্তত অর্ধশত বছর যাবত বসবাস করে আসা জেলেরা মাছ ধরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে প্রায় এক যুগ ধরে। তাই তারা সেই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার,নদীর বাধ পুরো কেটে নদীকে উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানান।
এছাড়াও এই যায়গাটিতে শীতকালে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন থাকায় যায়গাটিকে পর্যটন স্পট হিসেবে ঘোষণারও দাবি জানান স্থানীয়রা।তারা বলেন এটি পর্যটন স্পট হলে দূর দুরন্ত থেকে লোকজন ছুটে আসবে দেখতে।এতে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি ব্যাপক সম্ভাবনার তৈরি হবে।
ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে জেলেদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন জব্বার খান,মনির হাওলাদার,সুমন হাওলাদার,জাকির হাং,দেলোয়ার হাং এবং সমাজকর্মী বালী তূর্য প্রমুখ।
মানববন্ধনে স্থানীয় জেলে জনগোষ্ঠী,সাধারণ নাগরিক, সুশিল সমাজেফ প্রতিনিধি সহ দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *