Home সারাদেশ সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটে ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার প্রকোপ, সেবা দিতে হিমশিম
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪

সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটে ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার প্রকোপ, সেবা দিতে হিমশিম

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:

বিশ্ব ঐতিহ্য  বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ সহ নয়টি উপজেলায় আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে জ্বর, সর্দি, কাশি ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।আক্রান্তের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। প্রখর রোদের পাশাপাশি ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এসব রোগীরা ভর্তি হচ্ছে- ডায়রিযা, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, বুকে ব্যাথাসহ নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক রোগী। সেবা নিতে বর্হিবিভাগেও বাড়ছে ভীড়। এমন পরিস্থিতিতে হিমশিম খাচ্ছে জেলা সদও হাসপাতালের চিকিৎসক ও নাসরা।আবহাওয়া জনিত কারণেই পানিবাহিত রোগীর চাপ বেড়েছে জানিয়ে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বেশি যতœবান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।গত দুই সপ্তাহ ধরে জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় শিশু ওয়ার্ডে ৩৬ শয্যার বিপরীতে ১০৫টি শিশু চিকিৎসাধীন।বাগেরহাট জেলার নয়টি উপজেলায় হাসপাতালেসূত্রে জানা যায়,  মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা,ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী, মংলা, রামপাল,  বাগেরহাটও কচুয়ায়৫০ শয্যা হাসপাতালে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় শিশু ওয়ার্ডে ৩০০ শয্যার বিপরীতে ১০০০টি শিশু চিকিৎসাধীন।   প্রতিদিনই বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

শয্যা না পেয়ে অনেক শিশুকে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। এছাড়া মেডিসিনসহ অন্য বিভাগগুলোতেও বাড়ছে রোগীর চাপ। প্রতিদিন বহির্বিভাগে সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। চিকিৎসক সংকট থাকায় রোগীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

শহরের দশানি থেকে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসা মনিরা বেগম বলেন, ‘তিনদিন ধরে সন্তানের কাশি ও জ্বর। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাইয়েছি। কিন্তু কোনো উপকার হয়নি। এ কারণে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’

এক মাস বয়সী শিশু সুলাইমান শেখকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন আঞ্জুমান বেগম। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে ছেলের জ্বর, সর্দি ও কাশি। এখানে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা এক্স-রে করতে বলেছেন। এক্স-রে রিপোর্টে ধরা পড়েছে ছেলের বুকে কাশি জমে শুকিয়ে গিয়েছে। চিকিৎসক বলেছেন, সুস্থ হতে সময় লাগবে।’

হাসপাতালের শিশু কনসালট্যান্ট শিহান মাহমুদ বলেন, ‘আবহাওয়াজনিত কারণেই রোগীর চাপ বেড়েছে। হঠাৎ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীর চাপ থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ৩৫৮ রোগী ভর্তি হয়েছে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, ‘হাসপাতালে ২৫০ শয্যা অনুমোদন থাকলেও জনবল রয়েছে ১০০০ শয্যার। এ অবস্থায় রোগীর চাপ থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১ হাজার ৩০০-১ হাজার ৪০০ রোগীকে সেবা দিতে হচ্ছে। স্বল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে ভালো সেবা দেয়া কঠিন।ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার আরও বলেন, উপকূলীয় জেলা গুলোতে বর্তমান সময়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দাদেরও একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে বিশুদ্ধ পানি পানের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। সেই সঙ্গে সুস্থ মানুষদের বেশি বেশি তরল খাবার গ্রহন ও মাঝে মাঝে খাবার স্যালইন খেতে হবে। পাতলা পায়খানা ও বমির পরিমাণ বেশি হলে বাড়ি না থেকে হাসপাতালে আসার অনুরোধ জানান তিনি।

(এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির)
বাগেরহাট সংবাদদাতা                     
০১৯১১২১১৯৬৫/০১৭১১৩৭৭৪৫০
তারিখ-৩০.৯.২০২৪।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *