ডিএসইতে কমেছে ৮৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশের পর গতকাল রোববার প্রথম কার্যদিবসে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে শেয়ার বাজারে। দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক দিনেই কমেছে ৮৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। এছাড়া লেনদেনও ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের শেয়ার বাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছিলেন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে বিভিন্ন প্রণোদনা থাকবে। কিন্তু তা তো নেই-ই, উলটো মূলধনী মুনাফার ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান আরও কমানো হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে অনেকটা হতাশ, যার কারণে সূচকের এই বড় পতন।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ডিএসইতে লেনদেনকৃত মোট ৩৯২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৩৩টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর দর কমেছে ৩৪০টি কোম্পানির। অর্থাৎ, লেনদেনকৃত কোম্পানির মধ্যে গতকাল ৮৬.৭৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এতে এই বাজারের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৬৫.৭৬ পয়েন্ট কমে ৫১৭১.৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক ২২.৫২ পয়েন্ট কমে ১৮৩৫.৪৬ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ১৫.৯৪ পয়েন্ট কমে ১১২০.৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। দেশের প্রধান এই শেয়ার বাজারে গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০টি কোম্পানি হলো :তৗফিকা ফুড, ফরচুন সুজ, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ইউনিলিভার, সেন্ট্রাল ফার্মা, ই-জেনারেশন, স্কয়ার ফার্মা, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা ও বিএটিবিসি।
ডিএসইতে গতকাল শেয়ারের এই বড় দরপতন প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিনিয়োগকারীরা হতাশ। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে বাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। তাই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজারের উন্নয়নে বাজেটে প্রণোদনা আশা করেছিলেন। কিন্তু উলটো বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান আরো কমানো হয়েছে। এতে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলছেন শেয়ার বাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরও কমানো হয়েছে। এ অবস্থায় শেয়ার বাজারে একটি ভালো কোম্পানি কেন তালিকাভুক্ত হবে? আমি আশা করব, সংশ্লিষ্টরা শেয়ার বাজারের উন্নয়নে এসব বিষয় ভেবে দেখবেন।