Home ধর্মীয় সংবাদ উত্তম জীবনসঙ্গী ও সুসন্তান লাভের দোয়া
Mei ১৬, ২০২৩

উত্তম জীবনসঙ্গী ও সুসন্তান লাভের দোয়া

সবাই নিজের জীবনে উত্তম জীবনসঙ্গী চায়, কিন্তু তা কখনো নিজ ইচ্ছায় চাইলেই পাওয়া যায় না, দয়াময় আল্লাহ যদি চান তাহলেই পাওয়া যায়। তিনি যদি না চান, তাহলে তা কখনোই ঘটবে না। আবার, আল্লাহ তায়ালা যদি চান তাহলে কেউই তা রুখতে পারবে না, যতোই প্রতিকূলতা থাক না কেন। আল্লাহর পক্ষে আমাদের ধারণা থেকেও উত্তম কিছু দেওয়া কোনো ব্যাপার না।

তিনি বান্দার প্রত্যাশার চেয়েও উত্তম কিছু দিতে সক্ষম। তার ইচ্ছার বিপরীতে কেউ কিছু পেতে পারে না। তাই উত্তম জীবনসঙ্গী পেতে মহান আল্লাহর ওপর একান্ত আস্থা ও বিশ্বাসের বিকল্প নেই। যিনি দিতে পারবেন, তার নৈকট্য লাভের চেষ্টা করতে হবে, শুধু তার রহমতের জন্য নিজের জীবনকে প্রস্তুত করতে হবে, রবের আদেশ পালনে সর্বদা নিজের নফসকে (আত্মা) নিয়োজিত রাখতে হবে।

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ চক্ষু শীতলকারী জীবনসঙ্গী পেতে দোয়া শিখিয়েছেন।

আল্লাহ তায়ালার বিধান তো বটে। মূলত সৃষ্টিগতভাবেই নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। নারী ছাড়া পুরুষ এবং পুরুষ ছাড়া নারীর জীবন অসম্পূর্ণ। বিয়ের মাধ্যমে মানুষের নিঃসঙ্গতা ও একাকীত্ব দূর হয়। জীবনে সুখ-প্রশান্তি ও আনন্দের ধারা বয়ে যায়।
আল্লাহ তায়ালা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করার পর হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে তার জীবনসাথিরূপে সৃষ্টি করেন। তাদের বিয়ের মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। সেই ধারাবাহিকতা এখনো পৃথিবীতে চলমান।

কোন আমল করলে দ্রুত বিয়ে হয় কিংবা বিয়ের ব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজ সহজ হয়, এই ব্যাপারে উলামায়ে কেরাম অনেক আমলের কথা উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে বিশেষ দুইটি কুরআনি আমলের কথা এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে।

চক্ষু শীতলকারী স্ত্রী লাভের দোয়া

পবিত্র কুরআনুল কারিমে আল্লাহর নবী হজরত মুসার (আ.) কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। সেখানে হজরত মুসার (আ.) একটি দোয়াও এসেছে। যে দোয়া পড়ার পর আল্লাহ তাআলা তার জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তার আশ্রয়ের পাশাপাশি উত্তম জীবনসঙ্গীনিরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

সেই দোয়াটি হলো-

ﺭَﺏِّ ﺇِﻧِّﻲ ﻟِﻤَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻟْﺖَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮٍ ﻓَﻘِﻴﺮٌ

উচ্চারণ: রব্বি ইন্নি লিমা- আনযালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাকির।

অর্থ: হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ পাঠাবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। (সূরা আল-কাসাস : ২৪)

আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের পরিচয়ে অনেক গুণাগুণের কথা পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো- তারা পুণ্যবান স্ত্রী ও সন্তানের জন্য দোয়া করেন।

কুরআনে বর্ণিত দোয়াটি শিখিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

 رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

উচ্চারণ: রব্বানা-হাবলানা-মিন আয্ওয়া-জ্বিনা-ওয়া যুররিইয়্যা-তিনা-কুররতা আ’ইয়ুনিঁও ওয়া জ‘আল্না-লিল মুত্তাকী-না ইমা-মা।

অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন। যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদেরকে (পুরুষদেরকে) মুত্তাকি লোকদের নেতা বানিয়ে দিন।’ (সূরা ফোরকান : ৭৪)

প্রত্যেক নামাজের (তা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল যে কোনো নামাজ হোক) শেষ বৈঠকে দোয়ায়ে মাছূরা পড়ার পর পবিত্র কুরআনে বর্ণিত এই আয়াতটি বিয়ের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আমল করলে আশা করা যায়, আল্লাহভক্ত দ্বীনদার, পরহেজগার ও আদর্শ স্ত্রী জুটবে।

মহান আল্লাহ তায়ালার মহত্বের কথা মাথায় রেখে দৃঢ় আশা নিয়ে উল্লেখিত দোয়াটির উপর নিয়মিত আমল করলে ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ তায়ালা নারী-পুরুষ সবাইকে তাদের চোখ জুড়ানো জীবনসঙ্গী ও সন্তান দান করবেন।

যারা মহান আল্লাহর কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী লাভের প্রত্যাশা করে, তাদের উচিত আল্লাহর কাছে তারই শেখানো ভাষায় আবেদন করা।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারিমে বান্দাকে উত্তম স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান লাভের দোয়া শিখিয়েছেন। যেসব স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান একে অন্যের চোখকে শীতল করবে। আর যেহেতু দোয়ার মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাই আমাদের উচিত সর্বদা দোয়া করে আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং সেই অনুযায়ী আমল করা। যেমন, নেককার জীবনসঙ্গী পাওয়ার দোয়া, উত্তম স্বামী পাওয়ার দোয়া ইত্যাদি।

সুতরাং মুসলিমদের উচিত আল্লাহ তায়ালার শেখানো ভাষায় তারই কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী ও সুসন্তান লাভের দোয়া করা। আর যারা বিয়ে করেছেন তারা স্ত্রী ও সন্তানদের দ্বীনদার করার জন্য, তাদের আদর্শবান করে গড়ে তোলার জন্য- প্রতিবার দোয়ায় এ আয়াত পাঠ করলে বিশেষ উপকার লাভ হয়।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন এবং আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *