এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বা প্রধান সন্দেহভাজন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশি আকতারুজ্জামান এমপি আনারেরই পুরনো বন্ধু। আক্তারুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। ঢাকার গুলশানে তাঁর বাসা রয়েছে। তাঁর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে তাঁর বাসা। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. সহিদুজ্জামানের ছোট ভাই। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে এমপি আনারকে হত্যা করার জন্য তিনি ঘাতকদের সঙ্গে পাঁচ কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন।
সে অনুযায়ী আনোয়ারুল ১২ মে কলকাতা যাওয়ার পরদিনই তাঁকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাংলাদেশে গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
৫৬ বছর বয়সী আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় গিয়ে পূর্বপরিচিত গোপাল বিশ্বাস নামের একজনের বাসায় উঠেছিলেন। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে ওই বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে বাংলাদেশে সৈয়দ আমানুল্লাহ, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা ও কলকাতার পুলিশ জানায়, আনোয়ারুল আজীম ১৩ মে দুপুরে গোপাল বিশ্বাসের বাসা থেকে বেরিয়ে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে যান। সেখানেই হত্যা করা হয় তাঁকে। তাঁর নিখোঁজের ঘটনায় ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন গোপাল বিশ্বাস। নিখোঁজের তদন্ত করতে গিয়ে কলকাতার পুলিশ তথ্য পায়, ওই ফ্ল্যাটে সৈয়দ আমানুল্লাহ ও শিলাস্তি রহমান নামের দুই ব্যক্তিও ছিলেন। এই তথ্যের সূত্র ধরে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ফয়সাল আলী ওরফে সাজি নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কলকাতার ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার সময় আক্তারুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন; যা ভাড়ার চুক্তিপত্রেও উল্লেখ আছে। আক্তারুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ খুঁজছে। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি গত সোমবার ঢাকা থেকে একটি ফ্লাইটে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু চলে গেছেন।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, স্বর্ণ চোরাচালানের আন্তর্দেশীয় চক্রের দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে আনোয়ারুলকে ভারতে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।