Home রাজনীতি বাংলাদেশে গ্রিন এনার্জিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব অস্ট্রিয়ার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪

বাংলাদেশে গ্রিন এনার্জিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব অস্ট্রিয়ার

বাংলাদেশ থেকে দক্ষকর্মী নেওয়া, সবুজ শক্তি, বিশেষ করে বায়ু এবং বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ করার পাশাপাশি ঢাকায় একটি বাণিজ্য অফিস খোলার প্রস্তাব দিয়েছে অস্ট্রিয়া।

সোমবার সকালে ভিয়েনায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে এ প্রস্তাব দেন।

ভিয়েনার হফবার্গ প্রাসাদে ‘হিউম্যানিটি অ্যাট দ্য ক্রসরোডস: অটোনোমাস উইপনস সিস্টেমস অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব রেগুলেশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি এ বৈঠকে অংশ নেন হাছান মাহমুদ।

বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অস্ট্রিয়ার বিনিয়োগ বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের যাতায়াত বৃদ্ধি এবং দ্বৈত কর এড়ানোর প্রস্তাবিত চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরের ওপর জোর দেন তারা। মন্ত্রী শ্যালেনবার্গ শিগগিরই বাংলাদেশে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল পাঠানো, ঢাকায় একটি বাণিজ্য অফিস খোলা এবং  অভিবাসন এবং জনযোগাযোগ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে সম্মতি দেন।

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অভিবাসন ও গতিশীলতা, জলবায়ু পরিবর্তন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ পরবর্তীকালেও বাণিজ্য সুবিধার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে সম্মত হন। বাংলাদেশের আইসিটি পেশাদাররা অস্ট্রিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোতেও অবদান রাখতে সক্ষম বলে তুলে ধরেন হাছান মাহমুদ।

অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যালেনবার্গের সঙ্গে মিয়ানমার, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিস্থিতিসহ দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপসহ আঞ্চলিক উন্নয়ন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিষয়ে আলোচনাকালে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ থেকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সহায়তার আহ্বান জানান হাছান মাহমুদ।

ভিয়েনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম ইউরোপ কাজী রাসেল পারভেজ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

অস্ত্র নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হোক মানুষের কল্যাণে 

এর আগে এ সম্মেলনে মানবতার স্বার্থে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ আর নতুন কোনো অস্ত্র গ্রহণ না করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, মানবতাকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অস্ত্র ব্যবস্থায় নয় বরং মানুষের কল্যাণে কৃষি, চিকিৎসা, মহাকাশ অন্বেষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মানবজাতির সুবিধার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপকারী প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

মানুষের ওপর অস্ত্রবল প্রয়োগে নিয়ন্ত্রণ রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে হাছান মাহমুদ প্রশ্ন রাখেন, যদি রাষ্ট্রবহির্ভুত এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ পায় তবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার কী হবে।

তিনি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিশ্বব্যাপী নীতি নির্ধারণের পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রাণহানির ক্ষমতাসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উভয়ের বিষয়েই উপযুক্ত আন্তর্জাতিক আইন বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় গাজার অনিশ্চিত পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং সংঘাত ও উত্তেজনার নতুন ফ্রন্ট খোলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।

সম্মেলনে অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ, কোস্টারিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নল্ডো আন্দ্রে টিনোকো, নরওয়েজিয়ান স্টেট সেক্রেটারি ইভিন্ড ভাদ পিটারসন এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সভাপতি মির্জানা স্পোলজারিক এগার সহ-প্যানেলিস্ট হিসেবে যোগ দেন।

অস্ট্রিয়ার ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ সম্মেলনে ১২০টিরও বেশি দেশ জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা, অধিকার গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার আট শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন৷

ভিয়েনায় বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য উন্মোচন 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রোববার ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য উন্মোচন ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছেন।

এ সময় দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির বঙ্গবন্ধু নন, বিশ্ব মানবতার প্রতীক বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিব মুক্তিকামী, স্বাধীনতাকামী, নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক অবিনাশী আলোকবর্তিকা।

রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আসাদ আলম সিয়াম, দূতাবাসের কর্মকর্তারা ও প্রবাসী বাংলাদেশি প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ভাস্কর্য উন্মোচন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দূতাবাস প্রাঙ্গনে একটি গাছের চারা রোপন করেন ও বঙ্গবন্ধু কর্নারসহ দূতাবাসের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য, ভিয়েনায় দূতাবাসটি বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব সম্পত্তি।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *