নিষেধাজ্ঞা ভেঙে নৌকার কর্মীদের নির্বাচনি ভোজ
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের তিনটি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনি ভোজ করেছেন। তানোরের তিনটি গ্রামে তিনটি খাসি জবাই করে এই ভোজের আয়োজন করা।
নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে এমন ভোজের বিষয়ে তানোরের ইউএনও এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর পক্ষে রাতেই অভিযোগ জানানো হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর কর্মী-সমর্থকরা জানান, বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারের শেষদিন ছিল। দিনের কর্মসূচি শেষে উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বহাড়া মাদ্রাসা মাঠে চোরখৈর গ্রামে নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর বাড়ির সামনে ও চন্দনকোঠা গ্রামের আমিনুলের দোকানের পাশে তিনটি ভোজের আয়োজন করা হয়। চোরখৈর গ্রামে নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর বাড়ির সামনে রান্না শেষে প্যাকেটে করে খাবার পরিবেশন করা হয়। অপর দুই জায়গায় আসা মানুষেরা অনুষ্ঠানস্থলেই বসে খাবার খান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে তিনটি জায়গায় রান্না শুরু হয়। তিনটি ভোজসভাতেই তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না নৌকার সমর্থনে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যের পরই খাওয়া-দাওয়া শুরু হয়। রাত প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া চলে।
এদিকে বহাড়া গ্রামে রান্নার সময় স্থানীয় এক যুবক ঘটনাস্থল থেকে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এতে তাকে বলতে শোনা যায়, আমরা বহাড়ায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লুৎফর হায়দার রশিদ ভাইয়ের প্রোগ্রাম শেষে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছি।
তার কথার ফাঁকে ফাঁকে সাউন্ডবক্সে গান শোনা যাচ্ছিল, ‘জয় বাংলা, জিতবে এবার নৌকা’।’ আর চুলায় মাংস রান্নার ধোঁয়া ওঠা দৃশ্য দেখানো হচ্ছিল।
ওই যুবক বলেন, ফারুক চৌধুরীর জয়ের লক্ষ্যে আমরা ২০০ লোক এখানে এক জায়গায় হয়েছি। ১০ থেকে ১৫ জন লোক বিএনপি থেকে এখানে যোগদান করেছেন। এই উপলক্ষে আমরা একটা ভোজের আয়োজন করেছি। সব নৌকাপাগল লোকজন এখানে।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই ভোজের ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর পক্ষে আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোজের আয়োজনের ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেনের কাছে অভিযোগ করা করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই তিনি সেখানে বিজিবি পাঠানো হয়েছিল। হয়তো বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অনুষ্ঠান শেষ হয়ে কর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন। ফলে কাউকে আটক করা যায়নি।
উল্লেখ্য, রাজশাহী-১ আসনে নৌকার প্রার্থী টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী এবারো আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। আর মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এ আসনে ১১ প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও বেলুন প্রতীকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিণী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার জাহানও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।