Home শিক্ষা-ক্যাম্পাস খাবার অর্ডারে ভোগান্তি কমাবে ‘জেএনইউ ক্যান্টিন’ অ্যাপ
নভেম্বর ৮, ২০২৩

খাবার অর্ডারে ভোগান্তি কমাবে ‘জেএনইউ ক্যান্টিন’ অ্যাপ

তৌকির আহমেদ, জবি প্রতিনিধি: 
খাবার অর্ডার ও পেমেন্টে ভোগান্তি লাঘবে ‘জেএনইউ ক্যান্টিন’ নামের একটি বিশেষ অ্যাপ উদ্ভাবন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের সুস্মিতা সাহা (প্রিয়া) এবং তানভীর আহম্মেদ হৃদয়। অ্যাপটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার ও কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রয়োগ করা যায় সেদিকে কাজ করার লক্ষ্য সংশ্লিষ্টদের।
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারে অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কোর্সের অংশ হিসেবে এই অ্যাপটি উদ্ভাবন করেন সুস্মিতা ও তানভীর৷ বিশেষ অ্যাপটি উদ্ভাবনের কাজ গত বছরের আগস্টে শুরু করেন তারা। যা শেষ হয় নভেম্বরে। সার্বিক প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সজীব সাহা।
 ‘জেএনইউ ক্যান্টিন’ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটির বিশেষত্ব হলো এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পছন্দের খাবারের আইটেম অর্ডার করতে পারবেন। প্রথমে খাবারের আইটেম নির্ধারণ করে অর্ডার দিবেন। অর্ডার কনফার্ম হলে স্ট্যাটাসে ‘ডান’ লেখা চলে আসবে। একইসাথে শিক্ষার্থীদের অর্ডারের সার্বিক তথ্য সম্বলিত একটি নির্দিষ্ট কিউআর কোড তৈরী হবে। এই কিউআর কোডটি স্ক্যান করেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে তার খাবারের আইটেম দিবেন দোকান বা ক্যান্টিন থেকে। তবে খাবার অর্ডারের পর মূলত নির্ধারিত দাম পরিশোধ করতে হবে।এরপরই অর্ডার কনফার্ম হবে। যেটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেই করা যাবে।
প্রাথমিকভাবে অ্যাপটিতে ছয়টি খাবারের আইটেমের নাম সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে ক্যান্টিনে বা ফুড ডেলিভারিতে অ্যাপটি ব্যবহার করা হলে খাবারের আইটেম আপডেট করা যাবে। অ্যাপটি সহজভাবে অপারেট করার জন্য রয়েছে বেশ কিছু ফিচার। ট্রায়াল সেশনে ৫টি ডিভাইসে অ্যাপটি ইনস্টল করা হয়।
মূলত ক্লাস-পরীক্ষা কিংবা অন্য কোন একাডেমিক কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের সময়মত খাওয়া সম্ভব না হওয়া এবং ক্যান্টিনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করে খাবার পাওয়ার ঝামেলা রোধেই এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি উদ্ভাবন করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা৷
এটি পুরোপুরি ডিজিটাল সিস্টেম। অনলাইনভিত্তিক হওয়াতে শিক্ষার্থী কিংবা খাবার সরবরাহকারী কাউকেই ঝামেলা পোহাতে হবেনা৷ বরং কম সময়েই পেমেন্ট ও অর্ডার কনফার্ম সম্ভব হবে৷ যখন চাইবে তখনই শিক্ষার্থীরা খাবারটি সংগ্রহ করতে পারবে। স্ট্যাটাস এবং অর্ডারের সার্বিক তথ্য সম্বলিত কিউআর কোড থাকায় অর্ডারে কোনরূপ গড়মিল হওয়ার সুযোগও নেই।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ক্যান্টিন থেকে বছরে কত টাকার খাবার বিক্রি হয়েছে এবং অর্ডার বেড়েছে নাকি কমেছে সেটির সার্বিক হিসাব পিডিএফ ফরমেটে বের করা যাবে। এই অ্যাপটি খাবার ডেলিভারি বা সংগ্রহের জন্য যেকোন ব্যক্তিই ব্যবহার করতে পারবেন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
অ্যাপটির উদ্ভাবনকারী শিক্ষার্থী সুস্মিতা সাহা প্রিয়া বলেন, একাডেমিক কোর্সের অংশ হিসেবে আমরা এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি তৈরী করি। এই অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। আমাদের কাজে কারো উপকার হলে সেটি আমাদের জন্য আনন্দদায়ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিছু করতে পারার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায়না।
অপর শিক্ষার্থী মো. তানভীর আহম্মেদ হৃদয় বলেন, জেএনইউ ক্যান্টিন অ্যাপটি নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী। এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহার করা হলে ছাত্র-শিক্ষক সবাই উপকৃত হবে। সর্বোপরি আমারা চেষ্টা করেছি অ্যাপটি যেন সবার ব্যবহার উপযোগী হয়।
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সজীব সাহা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পদ সীমিত, সুযোগ-সুবিধা কম৷ এর মধ্যেও শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন বা সফলতায় শিক্ষক হিসেবে আমরা গর্বিত। আমাদের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে৷ তাদের ভালোভাবে গাইডলাইন দিতে পারলে তারা আরও সফল হবে। আমরা অ্যাপটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করবো।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. জি এম আল-আমীন বলেন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের এমন উদ্ভাবন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গর্বের বিষয়৷ তারা ধারাবাহিকভাবে সফল হচ্ছে৷ শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত অ্যাপটি প্রয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হবে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *