‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগানের রায় নিয়ে আপিলে শুনানি আজ
‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান- হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হবে আজ।
সোমবারের (৯ ডিসেম্বর) জন্য প্রকাশিত আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আবেদনের শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
২০২০ সালের ১০ মার্চ ওই রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন।
রায়ের দিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী ড.বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আদালত বাংলায় রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘জয় বাংলা জাতীয় ঐক্যের স্লোগান। জয় বাংলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় স্লোগান এবং জয় বাংলা ৭ মার্চের ভাষণের সাথে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এসময় আদালত আরও বলেন, ‘আবেদনকারী সংবিধানের ৩ ও ৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ধারাবাহিকতায় জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করা দাবি করেছেন, এটা এই আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত। কারণ কোনো আইন প্রণয়ন করা এবং সংবিধান সংশোধন করার একমাত্র অধিকার জাতীয় সংসদের। ’
তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ রুলের সমর্থনে হলফনামা দিয়েছেন উল্লেখ করে আদালত রায়ে বলেন, আইন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব জয়বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করায় একমত পোষণ করেছেন।
এরপর আদালত রায়ের আদেশ অংশ ঘোষণা করেন।
আদেশে আদালত বলেন, ক.আমরা ঘোষণা করছি যে, জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে। খ. সকল জাতীয় দিবসগুলোতে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারীগণ এবং রাষ্ট্রীয় সকল কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানের বক্তব্য শেষে জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ যেন করেন, সে জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। গ.সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি সমাপ্তির পরে ছাত্র শিক্ষকগণ যেন জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ করেন, তার জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আদালতের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন ৩ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিলে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রুলে ‘জয় বাংলা’কে কেন জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর আদেশের পরে বশির আহমেদ বলেছিলেন, জয় বাংলা হচ্ছে আমাদের জাতীয় প্রেরণার প্রতীক। পৃথিবীর ৬০টি দেশে জাতীয় স্লোগান আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে আমরা আমাদের চেতনার সেই ‘জয় বাংলা’কে স্বাধীনতার এতদিন পরেও জাতীয় স্লোগান হিসেবে পাই নাই।
তিনি বলেন, জয় বাংলা কোনো দলের স্লোগান নয়, কোনো ব্যক্তির স্লোগান নয়, এটা হচ্ছে আমাদের ন্যাশনাল ইউনিটি। এই স্লোগান দিয়ে একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।