Home রাজনীতি ‘ষড়যন্ত্রের’ গন্ধ পাচ্ছে বিএনপি
নভেম্বর ২১, ২০২৪

‘ষড়যন্ত্রের’ গন্ধ পাচ্ছে বিএনপি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘কোথাও কিছু একটা ষড়যন্ত্র চলছে’ বলে তার দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করার পর দল ও দলের বাইরে এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দলটির অনেকের ধারণা সংসদ নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য ‘কোনো একটি পক্ষ সক্রিয়’ হয়ে কাজ করছে।

দলটির একাধিক নেতা বলেছেন, নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে বলেই নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টার আশঙ্কা আছে বলে তারা মনে করেন। সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারও কারও বক্তব্যেও তারা সেই ইঙ্গিত পাচ্ছেন।

পাশাপাশি সম্প্রতি ‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনা নিয়ে বিএনপির ভূমিকা’ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতার মন্তব্য নিয়েও নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছে দলটির ভেতরে।

তবে দলটির মুখপাত্র ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলছেন, জরুরি সংস্কার ও নির্বাচনি প্রস্তুতি একই সাথে চলতে পারে বলে তারা মনে করেন। একই সাথে ‘নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে’ বিএনপির কোন ভূমিকা নেই বলেও তিনি দাবি করেন।

“কিন্তু বিএনপি মনে করছে পতিত স্বৈরাচারের বিভিন্ন ফ্যাক্টর বিভিন্ন ভাবে নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য সরকারকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। এটিই ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ।

প্রসঙ্গত, সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সরকার গঠিত অনেকগুলো কমিশন এখন কাজ করছে। এর মধ্যে সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্যও উদ্যোগ নিয়েছে।

যদিও সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এক সাক্ষাতৎকারে সামনের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রশ্নে বলেছেন, “বিএনপি এটা করেছে, বলেছে সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে”।

যদিও বিএনপি মহাসচিব ফেনীর এক অনুষ্ঠানে বলেছেন ‘আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ নাকি আমরা দিচ্ছি। এই কথাটি সঠিক না’।

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেয়া, এমনকি রাজনীতি করারও সুযোগ দেয়ার ঘোর বিরোধী। এর আগে সংবিধান সংশোধন এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অবস্থানের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছিলো বিএনপি।

ফলে রাষ্ট্রপতিকে সরানোর কথা বলেও সেখান থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। অন্যদিকে সংবিধান সংস্কারে একটি কমিশন কাজ করলেও বিএনপি মনে করে এটি বাস্তবায়ন করতে পারে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির আশাহত হওয়ার মূল কারণ হলো নির্বাচন বিলম্বিত হলে বিএনপির ‘বর্তমান জনপ্রিয়তা’ এবং ‘পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ’ একই ধরনের নাও থাকতে পারে।

সে কারণেই ‘নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা’ তাদের কাছে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

তারেক রহমান কী বলেছেন

‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “আমরা প্রায়ই বলি ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি। আপনারা নিশ্চয়ই গত কয়েক দিনের পত্র-পত্রিকার খবর থেকে বুঝতে পারছেন। কোথাও কিছু একটা ষড়যন্ত্র চলছে। কাজেই জনগণকে সচেতন করতে হবে, জনগণকে পাশে রাখতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে।’

একই সঙ্গে তিনি বলেন গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে ভোটের মাধ্যমে জবাবদিহি তৈরি হয়। “এই ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম ও খুন হয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যেকোনো মূল্যে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।“

মূলত তার এ বক্তব্যের পর ‘কোথাও কিছু একটা ষড়যন্ত্র চলছে’ -মন্তব্যটি আলোচনায় চলে আসে।

তারেক রহমান ও তার দলের নেতারা গত কিছুদিন ধরেই সরকারকে সহযোগিতার পাশাপাশি ‘দ্রুত নির্বাচন’ দাবি করে আসছেন।

যদিও সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নির্বাচনের আগে সংস্কারের কথা বলছেন এবং একই সাথে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন যা দলটির নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *