কেমন হতে যাচ্ছে ট্রাম্পের প্রথম ১০০ দিন
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনের জন্য বেশ কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন।
তার লক্ষ্য হলো- আগের প্রশাসনের নীতিগুলো উলটে দেওয়া এবং প্রথম মেয়াদে রেখে যাওয়া কাজগুলো পুনরায় শুরু করা।
প্রথম দিনেই তিনি মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত বন্ধ করা এবং বড় আকারের অভিবাসী বহিষ্কারের জন্য প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
সীমান্ত ও অভিবাসন নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ
ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম পদক্ষেপে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা রয়েছে। এতে অবৈধ অভিবাসন কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বড় আকারের অভিবাসন অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন সংস্থা ICE-র সীমিত সংস্থান, কর্মশক্তি বৃদ্ধি এবং আইনি চ্যালেঞ্জের কারণে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
‘গ্রিন নিউ স্ক্যাম’ বাতিল ও শক্তি উত্পাদন বাড়ানো
ট্রাম্প তার প্রাথমিক নীতি হিসেবে জলবায়ু সংক্রান্ত বাজেট কমানো এবং কয়লা ও তেল খাতে করের ছাড় ঘোষণা দিয়েছেন।
তার মতে, ‘গ্রিন নিউ স্ক্যাম’ বাতিল করে এক বছরে জ্বালানির মূল্য ৫০ শতাংশ কমানো সম্ভব। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি পুনরায় শক্তি উৎপাদনে মনোযোগ দিতে চান, মার্কিন যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
নির্বাহী আদেশে প্রশাসনিক পরিবর্তন
ট্রাম্পের সহযোগীরা ইতোমধ্যেই কয়েকটি নির্বাহী আদেশ প্রস্তুত করছেন, যা তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। তার ‘স্কেজুল এফ’ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ফেডারেল প্রশাসনের বেশিরভাগ কর্মীকে ‘ইচ্ছামত বরখাস্তকৃত’ হিসেবে পুনঃনিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এর মাধ্যমে তিনি তার প্রশাসনে রাজনৈতিক সমর্থকদের নিয়োগ দিতে পারেন। যদিও বিরোধীরা একে একটি অরাজনৈতিক ও প্রশাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
আইনসভা ও আদালতে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ডেমোক্রেট এবং নাগরিক অধিকার রক্ষাকারী সংগঠনগুলো দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রস্তুত। যেমন- ACLU ট্রাম্পের সম্ভাব্য কর্মকাণ্ডগুলো প্রতিরোধে কৌশলগত নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
তারা বলছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো আইনি এবং মানসম্মত কাঠামো উপেক্ষা করে প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার হিসাবে দেখা যেতে পারে।
অর্থনৈতিক নীতি ও আইনসভা
কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরাও ট্রাম্পের এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। হাউস স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, তারা সীমান্ত সুরক্ষার পরই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কর সংস্কারের দিকে মনোযোগ দেবেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের কর সংস্কার নীতির ধারাবাহিকতায় এই মেয়াদেও তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিন মূলত অনেকগুলো উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও বিতর্কিত পদক্ষেপে পূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো ও নীতি প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে পারে।
সূত্র: এনপিআর