Home বানিজ্য কারসাজিতে চড়া চাল পেঁয়াজের বাজার
Oktober ২৬, ২০২৪

কারসাজিতে চড়া চাল পেঁয়াজের বাজার

সরবরাহ বাড়াতে পেঁয়াজ ও চাল আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। বাজারেও সরবরাহ পর্যাপ্ত। কিন্তু প্রতিবছরের মতো এবারও সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখানো হচ্ছে। হুহু করে বাড়ানো হচ্ছে দাম। কারসাজি করে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজে ১০ এবং দেশি জাতে সর্বোচ্চ ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

পাশাপাশি চাল বস্তাপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে ভোক্তা প্রতি সপ্তাহেই বাড়তি দামে কোনো না কোনো পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার ৫ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজের ওপর থেকে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু করলে দেশের বাজারে আসতে থাকে। এ সময় দেশি পেঁয়াজের নতুন মৌসুম শুরু হয়। দেশি পেঁয়াজের মজুতও শেষদিকে। এ অবস্থায় বাজারে সরবরাহ কম- এমন অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যটির দাম বাড়াচ্ছে। শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, যা সাতদিন আগেও ১১০ থেকে ১২০ টাকা ছিল।

পাশাপাশি ১৬ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর চাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে। এনবিআর সূত্র জানায়, সরবরাহ বাড়াতে চাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান তিন ধরনের শুল্ক কমানো হয়েছে। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে এ শুল্ক কমানোর প্রভাব বাজারে পড়েনি। যেখানে দাম কমার কথা, উলটো বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। আর কেজিপ্রতি বেড়েছে ২-৩ টাকা। শুক্রবার প্রতি কেজি পাইজাম ও বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৪ টাকা, যা সাতদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৫৪-৬২ টাকায়। আর মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৫২-৫৩ টাকা, যা আগে ছিল ৫০ টাকা।

কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে এসেছেন মো. সালাউদ্দিন। তিনি জানান, সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে নভেম্বর এলেই বাজারে অসাধুরা পেঁয়াজের দাম নিয়ে কারসাজি করে। এ বছরও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। কেজি ১৩৫ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। এছাড়া চালের দামও বাড়ছে, যা কাম্য নয়।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র ঘোষ বলেন, এ সময় দেশি পেঁয়াজ শেষ পর্যায়ে থাকে। নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করে। এবার বন্যায় কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। যে কারণে এখনো মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসেনি। এ কারণে বাজারে সরবরাহে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ বড়তে থাকলে দাম কমে যাবে।

চালের দাম বাড়ার বিষয়ে কাওরান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মিল থেকে কারসাজি না হলে মূলত চালের দাম বাড়ে না। তারা বিভিন্ন সময় চালের দাম নিয়ে কারসাজি করে। এবারও সেটাই হচ্ছে। বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা বাড়ানোর ফলে পাইকারিতে বেড়েছে, যা খুচরা পর্যায়ে প্রভাব পড়ছে।

অন্যদিকে খুচরা বাজারে ডিমের দাম কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরিগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, যা আগে ১৬০-১৬৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বাজারভেদে ১৮৫-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাতদিন আগেও ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খুচরা বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমলেও এখনো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার প্রতি কেজি গোল বেগুন মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। কেজিপ্রতি পটোল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ঢ্যাঁড়শ ও ধুন্দল ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি শসা মানভেদে ৬০-৭০, পেঁপের কেজি ৪০-৫০, কচুর মুখি ৭০-৮০, কচুর লতি ৮০, টমেটো ১৬০, গাজর ১৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি শিম ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০-৩০০ এবং আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা, প্রতি পিস লম্বা লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *