Home রাজনীতি শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা চাই: জি এম কাদের
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪

শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা চাই: জি এম কাদের

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে ভালো নির্বাচন হলেও দেশ ভালো সরকার পায়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের পর আমরা কখনো সঠিক রাজনীতি পাইনি। আমাদের সংবিধান এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা দিয়েছে। একই ব্যক্তি নির্বাহী বিভাগ, সংসদ ও প্রায় শতভাগ বিচার বিভাগের প্রধান। সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠান ঐ একই ব্যক্তির হাতে। ক্ষমতা বাড়াতে সংবিধানকে বারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এই সংবিধানের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনে যাকেই ক্ষমতায় বসাবেন, তিনিই ক্ষমতার জোরে দানব হতে বাধ্য। শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা চাই। নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই।

সোমবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, দুটি দলই দলীয়করণের মাধ্যমে সব প্রতিষ্ঠান কুক্ষিগত করেছিল। আমরা কখনো প্রশাসন ও বিচারবিভাগ দলীয়করণ মুক্ত পেয়েছি? এক দলীয়করণ থেকে আরেক দলীয়করণ চাই না। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধানের এক তৃতীয়াংশ কখনোই বাতিল করা যাবে না, এটা কোনো যৌক্তি কথা নয়। সংবিধান সংশোধন করে গণভোট দেওয়ার বিধান থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার তা করেনি। আমি মনে করছি, কেউ রিট করলেই মহামান্য আদালত বিষয়টি মঞ্জুর করবেন। সংবিধান সংশোধন করে গণমুখি এবং জবাবদিহিতামূলক সরকার ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চাই। তবেই আমরা বুঝতে পারব নির্বাচন বিষয়ে কতটা সংস্কার হলো, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা। যারাই ক্ষমতায় আসুক তারা যেনো দানব না হতে পারে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। ব্যক্তিগতভাবেও আমরা তাদের বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, দেশ যখন স্বৈরাচার মুক্ত হলো, তখন একটি শ্রেণি আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, আমরা ২০২৪ সালের নির্বাচনে গিয়েছি তাই নাকি আওয়ামী লীগ দানবে পরিণত হয়েছে। আমরা নির্বাচনে না গেলে কি নির্বাচন হতো না? আমরা নির্বাচনে না গেলে আওয়ামী লীগ কি ক্ষমতাচ্যুত হতো? ২০১৪ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ আমাদের মাঝে একটি দালাল পার্টি তৈরী করে রেখেছিল। অবৈধভাবে তাদের জাতীয় পার্টির লোগো ও প্রতিক ব্যবহার করতে সহায়তা করেছিল আওয়ামী লীগ। টেলিভিশনে গিয়ে তারা জাতীয় পার্টি পরিচয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলতো। আমাদের বিভ্রান্ত করা হতো। আওয়ামী লীগ দানবীয় শক্তি দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনীতি করতে দেয়নি। বিএনপিকে জেল-জুলুম করে ঘরছাড়া করেছিল। জামায়াতকে তো রাজনীতির মাঠে দাঁড়াতেই দেয়নি।

জি এম কাদের আরও বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব হয়েছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে যে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ হয়েছে তা ইতিহাসে আর নেই। কোনো আন্দোলনে এমনভাবে গুলি চালানো বাংলাদেশের ইতিহাসে আর নেই। এই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। দেশের মানুষ অনেক আশা নিয়ে এই বিপ্লবে সমর্থন দিয়েছে। যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই আমরা রাজনীতি করব। গতানুগতিক রাজনীতি বিসর্জন দেওয়ার সময় এসেছে।

জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীনের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, আতিকুর রহমান আতিক, শেরীফা কাদের, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী প্রমূখ।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *