মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে যত মামলা
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
রোববার আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুত্র এবং তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৭ই আগস্ট মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট।
মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেছেন, যেহেতু তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সে কারণে আদালত তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন তার পক্ষে আপিল ফাইল করার পর এই পরোয়ানা স্থগিত হবে।
মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী মেজবাহ জানিয়েছেন, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলাটি ২০১৫ সালে দায়ের করা হয়েছিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস, বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মাহমুদুর রহমানকে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ২০০৫ সালে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
তিন বছর পর ২০০৮ সালে তিনি বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলীর মালিকানাধীন আমার দেশ পত্রিকার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেন।
সে সময় থেকেই তিনি পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল।
মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী মেজবাহ জানিয়েছেন, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার মোট সংখ্যা ১৩০টির মতো, এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক হয়েছে মানহানির মামলা।
এছাড়া বিচারপতির কথোপকথন পত্রিকায় ফাঁস, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, আর্থিক অনিয়ম, প্রতারণা, বিস্ফোরকদ্রব্য, পুলিশের কাজে বাধাদানসহ নানা ধরণের মামলা রয়েছে।
মাহমুদুর রহমানের আইনজীবীর দাবি, এসব মামলার বেশিরভাগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
মাহমুদুর রহমান প্রথম আটক হয়েছিলেন ২০১০ সালের জুন মাসে। আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক হাসমত আলীর করা একটি প্রতারণা মামলায় তাকে তখন গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশনার অনুমতি বা ডিক্লারেশনও বাতিল করে দেওয়া হয়।
সেসময় ঢাকার জেলা প্রশাসকের আদেশে পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করার পর পুলিশ আমার দেশের ছাপাখানাও বন্ধ করে দেয়।
ঢাকার তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুহিবুল হক বলেছিলেন, আইন অনুযায়ী একজন প্রকাশক ছাড়া কোনো পত্রিকা প্রকাশিত হতে পারে না এবং দৈনিক আমার দেশ বর্তমানে (ওই সময়ে) কোনো বৈধ প্রকাশক ছাড়াই প্রকাশিত হচ্ছিল। কাগজটির বৈধ কোনো সম্পাদক না থাকায় ছাপাখানা ও প্রকাশনা আইন ১৯৭৩ অনুসারে এর ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে।