যুক্তরাষ্ট্রে ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতে নিহত ৪৪
আটলান্টিক মহাসাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৪ জন। এছাড়া ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড শহরের উপকূলে আছড়ে পড়ে হেলেন। এ সময় ওই এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল। বিধ্বংসী গতির এই ঝড়ের কারণে বিগ বেন্ডের আশপাশের এলাকার অজস্র গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে, অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। ব্যাপক ধ্বংসাত্মক হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আবহওয়া দপ্তর হেলেনকে ‘ক্যাটাগরি ৪’ ঘূর্নিঝড়ের তকমা দিয়েছিল।
বিগ বেন্ডে আছড়ে পড়ার পর জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলাইনা এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনার দিকে এগোতে হতে থাকে হেলেন। এ সময় কমতে থাকে ঝড়ের গতিবেগও। শুক্রবার বিকেলের দিকে সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয় হেলেন, ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারে নেমে আসে বাতাসের গতিবেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) তথ্য অনুযায়ী, বিগ বেন্ডে আছড়ে পরার পরবর্তী ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজের শক্তি ধরে রাখতে পেরেছিল হেলেন। পরে ধীরে ধীরে এটি সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয়।
মার্কিন আবহওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত ঘূর্ণিঝড়র আঘাত করেছে, সেগুলোর মধ্যে বিধ্বংসী ক্ষমতার নিরিখে হেলেনের অবস্থান ১৪ তম এবং প্রশস্ততা বা বেড়ের দিক থেকে তৃতীয়। ফ্লোরিয়ায় আছড়ে পড়ার সময় এই ঝড়টির বেড় ছিল ৬৭৫ কিলোমিটার।
বিশাল-বিস্তৃত আকারের হওয়ার কারণে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলাইনা এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনার অধিকাংশ এলাকায় প্রবল বর্ষণ, ঝড়ো হাওয়া এবং আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস জানিয়েছেন, হেলেন আঘাতে তার অঙ্গরাজ্যে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান ক্যাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, তার অঙ্গরাজ্যে নিহত হয়েছেন ১৫ জন। নিহতদের মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের একজন উদ্ধারকর্মীও রয়েছেন।
বন্যা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে জর্জিয়ার ১৫০টিরও বেশি সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দি অবস্থায় বিভিন্ন শহরের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনগুলোতে আটকা পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে মার্কিন সেনাবাহিনীর ন্যাশনাল গার্ড শাখার ১ হাজার সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রায়ান কেম্প।