Home জাতীয় বায়তুল মোকাররমের সংঘর্ষ নিয়ে যা বললেন ২ খতিব
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

বায়তুল মোকাররমের সংঘর্ষ নিয়ে যা বললেন ২ খতিব

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়ানো নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার মসজিদের আগের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন নামাজ পড়াতে এলে তার অনুসারীদের সঙ্গে মুসল্লিদের এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মুসল্লিসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মসজিদের কয়েকটি দরজা ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মুসল্লিরা বলেন, আগের খতিব মুফতি রুহুল আমীন আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন।  গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে তিনি আত্মগোপন করেন। খতিবের অনুপস্থিতিতে চারজনকে রোটেশন করে জুমার নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। শুক্রবার জুমা পড়ানোর দায়িত্ব ছিল ড. আবু সালেহ আহম্মেদ পাটোয়ারীর। সংঘর্ষের পর তিনিই জুমার নামাজ পড়িয়েছেন। সংঘর্ষ নিয়ে দুই খতিব বক্তব্য দিয়েছেন।

বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশের মুসলিমদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এখানে জুমার নামাজ আদায় করতে দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে আসেন।

সাধারণত জুমার নামাজের ইমামতি করেন মসজিদের খতিব। তবে, বায়তুল মোকাররমের খতিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন গত জুলাই থেকে অনুপস্থিত থাকায় এতদিন অন্য দায়িত্বশীলদের দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করানো হতো।

কোনো কোনো গণমাধ্যমে আমীনের এ অনুপস্থিতিকে ‘সরকার পতনের পর আত্মগোপনে’ যাওয়া হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

অবশ্য এই সময় তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে বিবিসি বাংলাকে জানান রুহুল আমীন। প্রায় দুই মাস পর শুক্রবার তিনি মসজিদে যান।

শুক্রবার জুমার নামাজের ইমামতির জন্য আগে থেকে দায়িত্ব দেওয়া ছিল মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারীকে। আবু ছালেহ পাটোয়ারীসহ কয়েকজন মুসল্লি খতিবের কক্ষে গিয়ে রুহুল আমীনকে জুমার নামাজে ইমামতি থেকে বিরত থাকতে বলেন।

আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় অনুরোধ করা’ হয়েছে। অন্যদিকে রুহুল আমিন বলছেন তাকে ‘দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়া’ হয়েছে।

এরপর, সেখান থেকে গিয়ে খুতবায় দাঁড়ান পাটোয়ারী। কিছুক্ষণ পর সেখানে যান আমীন।

মিম্বারে (ইমামের দাঁড়ানোর স্থান) অবস্থান নেয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা দেখা দেয় তাদের সঙ্গে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে।

পরস্পরের অভিযোগ থেকে জানা যাচ্ছে, দু’জনের সঙ্গেই বেশ কিছু অনুসারী ছিলেন। উপস্থিত মুসল্লিরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন।

‘আমি খুতবা শুরু করেছিলাম। উনি দলবল নিয়ে এসে জোর করে মিম্বারে দাঁড়ায়। আমাকে একজন সরে যেতে বলে। আমি সরে দাঁড়াই,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন আবু সালেহ পাটোয়ারী।

অন্যদিকে রুহুল আমীন বলেন, ‘ওনার (পাটোয়ারী) সঙ্গেরা লোকেরা হট্টগোল করছিল। মুসল্লিরা আমাকে প্রটেকশন (নিরাপত্তা) দিয়ে রাখেন। আমি বয়ান শুরু করি। এর মধ্যে উনি (পাটোয়ারী) আমাকে বলেন, আপনি নামেন।’

যদিও, আবু সালেহ পাটোয়ারী বলছেন, খতিবের নিরাপত্তা এবং উদ্ভুত পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় তাকে চলে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।

এক পর্যায়ে পরিস্থিতি আর ‘নিরাপদ’ মনে না হওয়ায় স্থান ত্যাগ করেন মোহাম্মদ রুহুল আমীন। খতিব রুহুল আমীন ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও ততক্ষণে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষের মধ্যে।

আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, মসজিদের প্রবেশদ্বারগুলোতে তার (আমীন) লোক দাঁড়িয়েছিল। তারা সাধারণ মুসল্লিদের মারধর করেছে।

তবে, রুহুল আমীনের পালটা অভিযোগ, হট্টগোল করেছে পাটোয়ারীর সঙ্গে থাকা লোকেরা।

পাটোয়ারী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক। তিনি বলেন, সাধারণ মুসল্লিরা মিলে একটি কমিটির মতো গঠন করেছেন। যেটি মুসল্লি কমিটি হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।

৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে রদবদল দেখা গেছে।

কোথাও সরকারের নির্দেশে বদলি বা অবসরে পাঠানো হয়েছে। কোথাও ‘ফ্যাসিবাদের দোসর বা সুবিধাভোগী’ হিসেবে উল্লেখ করে বিক্ষোভকারীদের সৃষ্ট চাপের মুখে কেউ কেউ দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *