Home জাতীয় আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্রিফকেসে ১০ কোটি টাকার এফডিআরের নথি
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্রিফকেসে ১০ কোটি টাকার এফডিআরের নথি

গাড়ি, বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট—কী নেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপর কালো রঙের ক্লুগার ব্র্যান্ডের প্রাইভেট কার থেকে তাকে আটক করে র‍্যাব। ঐ গাড়িতে থাকা একটি ব্রিফকেসের সন্ধান মিলে। ব্রিফকেসটি জব্দ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ব্রিফকেসটি খোলা হয়। ব্রিফকেসে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, হিসাব বিবরণী ও এফডিআর নথি পায় ডিবি। এক এফডিআরের নথি দেখে ডিবির কর্মকর্তারা চমকে যায়। বিভিন্ন ব্যাংকের অন্তত ১০ কোটি টাকার এফডিআরের নথি সেখানে পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে ডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারের পর সাবেক কমিশনারকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে এফডিআরের নথিসহ তার বিভিন্ন সম্পদের তথ্য দিয়েছেন।

ডিবির ঐ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এফডিআরের নথিতে সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫টি এফডিআর, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ছয়টি এফডিআর, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে দুটি এবং পূবালী ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংকে একটি করে এফডিআর রয়েছে। এসব এফডিআর বিভিন্ন জনের নামে করা হয়েছে। যাদের নামে এফডিআর করা হয়েছে তাদের কেউই সাবেক কমিশনারের আত্মীয়স্বজন নয়। সাউথইস্ট ব্যাংকে সুরমা এন্টারপ্রাইজের নামে পাঁচটি এফডিআর করা হয়েছে। এছাড়া মেহেদি হাসান, রাসেল, আকাশ আহমেদ, আনোয়ারুল হক, দেলোয়ারা তাহেরা হ্যাপি, শারমিন জাহান, রাসেদুল হকসহ ১০ জনের নামে এফডিআর করা হয়েছে। একেকটি এফডিআরের অর্থের পরিমাণ গড়ে ১০ লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংক রামপুরা শাখায় এস এম নিয়াজন উদ্দিনের নামে ছয়টি এফডিআর করা হয়েছে।

ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সাত দিনের রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে গতকাল ছিল পঞ্চম দিন। জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক এই কমিশনার তার ব্যক্তি জীবনে অন্তত কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদ থাকার তথ্য দিয়েছেন। এদের মধ্যে ৫৫/১, সিদ্ধেশ্বরী, রুপায়ন স্বপ্ন নিলয়ে ৩ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ধানমন্ডির ১২/এ নম্বর রোডের ৬৯ নম্বর বাড়িতে একটি ফ্ল্যাট, ইস্কাটন গার্ডেন ১৩/এ প্রিয়নীড়ে একটি ফ্ল্যাট, নিকুঞ্জ-১-এর ৮/এ  রোডের ৬ নম্বর বাড়ি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এল ব্লকের ১ নম্বর রোডের ১৬৬ এবং ১৬৭ নম্বরে ১০ কাঠার ওপর ৬ তলা বাড়ি, পূর্বাচলের নিউ টাউনের ১ নম্বর সেক্টরের ৪০৬/বি নম্বর রোডে ১০ কাঠা জমি, আফতাবনগরে ৩ নম্বর  সেক্টরে ২১ কাঠা জমি, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁদখোলা মৌজায় ৬৭ শতাংশ জমি, জোয়ার সাহারা মৌজায় ১৫ কাঠা জমি ও গাজীপুরের চাঁদখোলা  মৌজায় ৩১ শতক জমি রয়েছে। এসব সম্পদ তিনি ও তার স্ত্রী আফরোজা জামান, ছেলে, শ্যালক, শ্যালিকা ও অন্যান্য নিকট আত্মীয়দের নামে দলিল করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আছাদুজ্জামান মিয়ার পরিবারের সদস্যদের মালিকানার দুটি কোম্পানির তথ্য পেয়েছে ডিবি। এর মধ্যে একটি হলো মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড। এর চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা জামান। আছাদুজ্জামান ডিএমপি কমিশনার থাকাকালীন রাজধানীর রুট পারমিট কমিটির প্রধান ছিলেন। ঐ সময় মৌমিতা পরিবহনকে রুট পারমিট দেওয়া হয়। মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান হারিসুর রহমান সোহান হলেন আছাদুজ্জামানের শ্যালক। শেপিয়ার্ড কনসোর্টিয়াম লিমিটেড নামে আরেকটি কোম্পানির চেয়ারম্যান আফরোজা জামান। এই কোম্পানির পরিচালক আছাদুজ্জামানের বড় ছেলে আসিফ শাহাদাত।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *