শেখ হাসিনার ঘুম কেড়ে নেওয়া কে এই ‘বাঘিনী’
সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে দেখেছিল ভাইরাল ভিডিও-যেখানে এক ছাত্রী হাতে মরিচের গুঁড়া মেশানো পানির বোতল নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে একাই রুখে দাঁড়িয়েছেন। তিনি ক্রমাগত পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করে যাচ্ছেন। এ ঘটনার কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কে এই শিক্ষার্থী?
তখনো ক্ষমতায় শেখ হাসিনা। চলছিল সরকারি চাকরিতে আসন সংরক্ষণের নিয়ম সংশোধন ইস্যুতে তীব্র ছাত্র আন্দোলন। সেই আন্দোলনে হামলা চালানোয় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ। তাদের রুখতে প্রত্যাঘাতে নামা পড়ুয়াদের মধ্যে এক শিক্ষার্থীর ভূমিকা ছিল তীব্র আলোচিত। সেই মুহূর্ত থেকে ওই ছাত্রী ‘বাংলার বাঘিনী’ নামে আলোচিত হয়েছেন।
ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। সরকারি দমন নীতি ও গুলিতে লাগাতার মৃত্যুর জেরে ছাত্র আন্দোলন গণবিক্ষোভে পরিণত হয়েছিল। গত জুলাই মাস থেকে চলা আন্দোলনের চূড়ান্ত দিনটি ছিল গত ৫ আগস্ট। ওইদিন গণবিক্ষোভে পতন হয় শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন তিনি।
সরকার পতনের পর থেকে আলোচনায় ‘বাংলার বাঘিনী’। তার একাধিক ছবি ও ভিডিও ছড়িয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে ওই ছাত্রী প্রচলিত অনেক সামাজিক রক্ষণশীল সংস্কার ভেঙে দিয়েছেন। কে তিনি?
কোটা সংস্কার আন্দোলনের অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই তরুণীর নাম ফারজানা সিথি। কোটা আন্দোলনের সময় তিনি পরিচিত হয়েছিলেন ‘কুইন’, ‘বাঘিনী’, ‘আয়রন লেডি’ বিশেষণে। ওই আন্দোলনের সময় ভাইরাল ভিডিওতে ফারজানা সিথি সরাসরি পুলিশকে আটকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনারা কি কোটার পুলিশ?’ ফরাজানার সেই আক্রমনাত্মক চেহারা ছাত্র আন্দোলনকে আরও উজ্জীবিত করেছিল।
নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও আলোচিত সিথি। গত ১৬ আগস্ট ঢাকার শাহবাগ থানার মধ্যে সেনাবাহিনীর এক অফিসারকে ঘিরে সিথির উগ্র আচরণে ভিডিও ফের ভাইরাল হয়। এ কারণে তিনি সমালোচিত হন।
উঠে আসে তার পরিচয়। জানা গেছে তার বাড়ি যশোর। তিনি একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দ্য হাংগার প্রজেক্ট, বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে জড়িত। তিনি গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্সের ২০১৯-২০ বর্ষের ছাত্রী। তবে আন্দোলনের নেতানেত্রীদের তালিকায় সিথির নাম পাওয়া যায়নি। তার ঘনিষ্ঠরা বলেছেন বিভিন্ন ফটোশুট ও ভিডিওগ্রাফিতে অংশ নিতে দেখা যায় তাকে।
সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়ে এক ভিডিও বার্তায় সিথি বলেন, এই রকম ব্যবহার আমার কোনোভাবেই করা উচিত হয়নি। আমি বাংলাদেশ আর্মির কাছে খুবই দুঃখিত। কিন্তু সিচ্যুয়েশন, টাইমিং এবং সেখানে যে কার্যকলাপ হতে যাচ্ছিল তার ব্যাপারে আমি সচেতন ছিলাম না। আবেগে মাথা গরম করে ফেলেছিলাম বুঝতে পারিনি।