Home রাজনীতি জাতীয় পার্টির জরুরি যৌথসভা, ১১ সিদ্ধান্ত
জুলাai ২৯, ২০২৪

জাতীয় পার্টির জরুরি যৌথসভা, ১১ সিদ্ধান্ত

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে জাতীয় পার্টির জরুরি যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার সকাল ১১টায় বনানী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদেরের সভাপতিত্বে এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিকাল সাড়ে তিনটায় যৌথসভা শেষে সভার সিদ্ধান্তগুলো গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ ভেবেছিল শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ হবে।কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক ও  অধিকার আদায়ের আন্দোলন হলেও এটি আর ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ আন্দোলন ছিল না। এক পর্যায়ে এটি ছাত্র জনতার আন্দোলনে রুপ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ দিনের শোষণ, বঞ্চনা, গণতন্ত্রহীনতায় মানুষের মধ্যে একটি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনের ওপর অত্যাচার শুরুর পর থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য জনগণও তাদের সঙ্গে নেমে পড়ে। ছাত্রদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন, অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী। এমন স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন আমরা অতীতে দেখিনি। এমন বর্বর ও নিপীড়নমূলক হত্যাকাণ্ড জাতি কখনও প্রত্যক্ষ করেনি। যার কারণে এ আন্দোলনে স্কুলের ছাত্র থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।’

এ সময় সভায় গৃহীত বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।সেগুলো হলো- ১. জাতীয় পার্টির এই যৌথ সভা সর্বসম্মতভাবে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জ্ঞাপন করে। সেই সঙ্গে চলমান অহিংস ছাত্র আন্দোলনের প্রতি জাতীয় পার্টির সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

২. সভায় ছাত্রদের অহিংস আন্দোলনে নিহত ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।

৩. এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ন্যায্য দাবি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমনের প্রক্রিয়াকে তীব্র নিন্দা জানানো হয় সভায়।

৪. সভায় ছাত্র আন্দোলনের নিহত আবু সাইদসহ শহিদদের মামলার এজাহারে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ না দিয়ে মিথ্যা এজাহার দাখিলের নিন্দা জানানো হয়।

৫. নিহত ছাত্র/ছাত্রীরা বীর মুক্তিসেনা হিসেবে আখ্যায়িত হবে এবং একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রকৃত শহিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

৬. সভায় ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত সব সরকারি কর্মকর্তা, উসকানিদাতাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানি/ নির্যাতন না করার আহ্বান জানানো হয়। ছাত্রদের নামে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করারও আহ্বান জানানো এবং কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেফতার সব ছাত্র ও নেতাদেরকে অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি করা হয়।

৮. ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবার-পরিজনকে সম্মানজনক ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি করা হয়েছে।

৯. অনতিবিলম্বে দেশের ইন্টারনেটসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো খুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

১০. সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে কেপিআইভুক্ত স্থাপনাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব সরকারের। সরকার এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।এই দায় সরকার এড়াতে পারে না।

১১. সভা মনে করে অনতিবিলম্বে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রকৃত ছাত্রদের হল প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্যম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সহিংসতায় নিহত ও আহত সাংবাদিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *