Home সারাদেশ বাগেরহাটে মোংলা-ঘাষিয়াখালী নদী ভাঙ্গনে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি 
জুলাai ২৮, ২০২৪

বাগেরহাটে মোংলা-ঘাষিয়াখালী নদী ভাঙ্গনে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি 

নিজস্ব প্রতিবেদক:বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ ক্যানেলের প্রচন্ড ভাঙ্গনে বাগেরহাটের রামপাল অংশের রামপাল উপজেলার রোমজাইপুর এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ভাঙ্গনে ইতিমধ্যেই ৮টি পরিবার বাস্তুচ্যূত হয়েছে। আরো ঝুঁকিতে রয়েছে ২০টি পরিবার। তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি ভাঙ্গন কবলিতরা।

খোঁজ খবরে জানা যায়, গত ২২জুলাই রাতে পূর্ণিমার জোয়ারের তোড়ে ভেঙ্গে যায় রোমজাইপুর গ্রামের প্রায় ৫০মিটার গ্রামরক্ষা বাঁধ। এতে ৪টি বাড়ী ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ঝুঁকিতে পড়েছে আরো প্রায় ২০টি বাড়ী। যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলিন হতে পারে সেসব বাড়ীঘর। ভাঙ্গনের ফলে বিদ্যুতের ২টি খুঁটিও উপড়ে পড়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ৪/৫টি খুঁটি। এ ভাঙ্গনে প্রায় ২কিলোমিটার আধাপাকা রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। এতে প্রায় দেড়’শ একরের চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয়, এমতাবস্থায় যাতায়াতের অভাব ও জলাবদ্ধতায় শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন ২বার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ীঘর। এতে এখানকার বাসিন্দারা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন। চাল-চুলা জ্বলছে না এক প্রকার। এক সপ্তাহ গত হলেও কোন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কোন কর্তা ব্যক্তি সরোজমিনে যাননি বলে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা বিভাষ হালদার জানান, অপরিকল্পিত ভাবে বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ ক্যানেল খনন করায় পুরো রোমজাইপুর গ্রামটি একটি ব-দ্বীপ হয়ে গেছে। এতে নদী ভাঙ্গন বেশী হচ্ছে। এখানে সরকারে থাকা লোকজন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। একই কথা বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ বায়েজিদ সরদার। তিনি বলেন, দেড় মাস পূর্বে রেমালের আঘাতে বাঁধ ভেঙ্গে এ গ্রাম তলিয়ে যায়। মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস মাছ ভেসে সবাই পথের ফকির হয়ে গেছে। ঠিকমত দু’বেলা এ গ্রামের মানুষ খেতে পারছেনা।

স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যা রীনা বেগম হেনা জানান, এ গ্রামের প্রায় সকল পরিবার দরিদ্র, হতদরিদ্র। রেমালের ক্ষয়ক্ষতির পরে আবার নদী ভাঙ্গনে মড়ার উপর খাড়ার ঘা পড়েছে। বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী ক্যানেলের প্রচন্ড স্রোতে গ্রামের দুই পাশে তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে রশিদ মোল্লা, মিজান মোল্লা, জামাল মোল্লা ও জাহাঙ্গীর শেখের বাড়ী ঘর ভেঙ্গে গেছে। পশ্চিম পাশে আমার একমাত্র সম্বল বাড়িটি ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আতঙ্কে আছি। যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এছাড়াও ইতিমধ্যে মুকুল শেখ, ইয়াহিয়া খান, আঃ সামাদ গাজী, আঃ হালিম খাঁন ও হারুন গাজীর বাড়ীঘর নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। যা কিছু আছে তাও ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ বিষয়ে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা বলেন, এনিয়ে স্থানীয় এমপি হাবিবুন নাহারের সাথে কথা হয়েছে। বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথেও কথা বলেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সাথে কথা বলেও এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো বলে জানান তিনি।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *