র্যাব হেফাজতে মৃত সুরাইয়ার দাফন, লাশ দেখা হলো না ছেলের
ভৈরবে র্যাব হেফাজতে মৃত সুরাইয়া খাতুনের (৫২) লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার নান্দাইলে দাফন হয়েছে। তার ছেলে তাইজুল ইসলাম ময়মনসিংহ কারাগারে থাকায় মায়ের লাশ দেখতে পারেননি। তাইজুলকে মায়ের লাশ দেখানোর দাবিতে দাফনে বাধা দিয়েছিল তার ভাইবোনেরা। পরে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান তাদের বুঝিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন।
এদিকে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সুরাইয়ার মৃত্যুর ঘটনায় থানায় শুক্রবার রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে।
জানা গেছে, নান্দাইলের বরুনাকান্দি গ্রামে গৃহবধূ রেখা আক্তার হত্যা মামলার আসামি ছিলেন সুরাইয়া খাতুন। তার স্বামী আজিজুল ইসলাম ও ছেলে তাইজুল ইসলামও একই মামলার আসামি। রেখা তাইজুলের স্ত্রী ছিলেন। বৃহস্পতিবার সুরাইয়াকে নান্দাইল এবং তাইজুলকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে ভৈরব র্যাব-১৪। পরে শুক্রবার সকালে সুরাইয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিন রাত ৮টায় ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জে পাঠায়।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় লাশের ময়নাতদন্ত শেষ করে ভৈরব থানা পুলিশ সুরাইয়ার লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়। দুপুর পৌনে ২টায় লাশ নান্দাইলে সুরাইয়ার বাড়িতে পৌঁছলে হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। তার ছেলেমেয়েসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে পুলিশ প্রহরায় দুপুর ২টায় স্থানীয় একটি মাঠে তার জানাজা হয়। বিকাল সোয়া ৩টায় স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। এর আগে সুরাইয়ার তিন সন্তান লিজা আক্তার, আফরোজা আক্তার ও সুমন দাবি করেন, তাদের ভাই তাইজুলকে কারাগার থেকে এনে মায়ের লাশ দেখাতে হবে। অন্যথায় লাশ দাফন করা যাবে না। পরে নান্দাইল থানার ওসি আব্দুল মজিদ ও চন্ডিপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া তাদের বুঝিয়ে বিচারের আশ্বাস দিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন।
সুরাইয়ার বড় মেয়ে লিজা আক্তার বলেন, আমার মাকে সুস্থ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই কিভাবে তিনি মারা গেলেন। আমার মাকে হত্যা করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সুরাইয়ার মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, তাইজুলকে মায়ের লাশ দেখানোর ক্ষমতা আমার নেই। তিনি এখন কারাগারে। আইনি প্রক্রিয়ায় দেখাতে হলেও তা সময়ের ব্যাপার। দুদিন হয়ে গেছে, লাশ তো দাফন করতে হবে।