Home বানিজ্য করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ছে না
Mei ৬, ২০২৪

করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ছে না

মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ছে না। তবে করদাতা হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের বিধান বাতিল করা হচ্ছে। এজন্য বাজেটে আয়কর আইনে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যক্তি ও কোম্পানি-দুই শ্রেণির করদাতাই কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে আয়করের বড় অংশ আদায় হয় কর্পোরেট কর থেকে। এনবিআর ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের কাছ থেকে আয় বাড়াতে চাচ্ছে। এনবিআর মনে করে, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়লে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী আয়করের আওতার বাইরে চলে যাবে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, সেই সঙ্গে আনুপাতিক হারে মানুষের আয়ও বেড়েছে। তাই সীমা বাড়ানোকে যৌক্তিক মনে করে না সংস্থাটি।

অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এনবিআর কখনোই টানা করমুক্ত আয়ের সীমা কমায়নি। সাধারণত ২-৩ বছর বিরতিতে আয়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ চলতি অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। ২০২০-২১ সালে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ লাখ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা করা হয়।

বর্তমানে নারী করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করদাতাদের করমুক্ত সীমা ৫ লাখ টাকা। করমুক্ত আয়ের সীমার ওপর আয় থাকলে বাড়তি আয়ের জন্য নির্ধারিত হারে আয়কর দিতে হয়। তবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের ৫ হাজার টাকা, অন্য সিটি করপোরেশন এলাকার ক্ষেত্রে ৪ হাজার টাকা এবং অন্য জেলা, উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলের করদাতাদের জন্য ৩ হাজার টাকা ন্যূনতম আয়কর ধার্য আছে।

অবশ্য রাজস্ব বাড়াতে বিত্তশালীদের কাছ থেকে বাড়তি কর আদায়ে ছক আঁকছে এনবিআর। বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ রয়েছে। বছরে সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। এটিকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে। অর্থাৎ বিত্তশালী বা বড় চাকরিজীবীদের বাড়তি কর দিতে হবে।

যদিও ব্যক্তি ও করপোরেট করদাতাদের হয়রানি এড়াতে এনবিআর বাজেটে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেটি হচ্ছে-ব্যক্তি ও কোম্পানি সব শ্রেণির করদাতাকে স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দিতে হবে। স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন অ্যাসেসমেন্ট করা হয় না। বর্তমানে ব্যক্তি করদাতাদের সব রিটার্ন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে জমা নেওয়া হয়। অন্যদিকে কোম্পানি করদাতারা স্বনির্ধারণী ও সাধারণ-দুই নিয়মেই রিটার্ন জমা দিতে পারেন। সাধারণ নিয়মে জমা দেওয়া রিটার্ন অ্যাসেসমেন্ট করার মাধ্যমে চূড়ান্ত কর আদায় করা হয়। আর স্বনির্ধারণী পদ্ধতির রিটার্ন অডিট করা হয়।

একাধিক কর কর্মকর্তা বলছেন, অ্যাসেসমেন্ট প্রথা বাতিল হলে কমপ্লায়েন্ট করদাতাদের হয়রানি কমবে। তবে এক্ষেত্রে রাজস্ব ঝুঁকির প্রবণতাও তৈরি হবে। যেমন অডিটে না পড়লে অস্বচ্ছ কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমাফিক রিটার্ন জমা দিয়ে পার পেতে পারে। অর্থাৎ আইনের মধ্য থেকে কোম্পানি কর ফাঁকির সুযোগ পাবে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *