নাগেশ্বরীতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে নিয়মিত জুয়ার আসর
মোঃ মশিউর রহমান বিপুল
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
নাগেশ্বরীর কালীগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রেষ্ঠ জুয়ারী আমিনুল ইসলাম তেলী ও আবুল হোসেন কসাইয়ের নেতৃত্বে দীর্ঘ দুই মাস থেকে শালমারা চরে এবং নুনখাওয়া ইউনিয়নের মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ এক মাস থেকে নুনখাওয়া বাজারের দক্ষিণে নদী ওপাড়ে চর নুনখাওয়ায় প্রতিরাতে চলছে রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর। জুয়া খেলা ও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছেন স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সের যুবক। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের মন্নেয়ারপাড় গ্রামের শ্রেষ্ঠ জুয়ারী আমিনুল ইসলাম তেলী ও আবুল হোসেন কসাইয়ের নেতৃত্বে জুয়ারী সাবুল ইসলাম, আলম মিয়া, শফিকুল ইসলাম, আমিনুর রহমানসহ ৩৫-৪০জনের যৌথ টাকায় কালীগঞ্জ ইউনিয়নের গয়েনাথ চন্দ্র মাস্টারের বাড়ীর পুর্বে শালমারা চর (দুধকুমার নদী) সংলগ্ন প্রতিরাতে চলছে বিশাল পরিসরে রমরমা জুয়ার আসর এবং মাদক সেবনের আড্ডা। অপরদিকে নুনখাওয়া ইউনিয়নের মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ এক মাস থেকে নুনখাওয়া বাজারের দক্ষিণে নদী ওপাড়ে চর নুনখাওয়ায় প্রতিরাতে চলছে রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর। জুয়া খেলা ও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছেন স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সের যুবক। কুড়িগ্রামে নদী ভাঙনে নিঃস্ব ও হতদরিদ্র পরিবার সবচেয়ে বেশি কালীগঞ্জ, নুনখাওয়া, বল্লভেরখাস ও কচাকাটা ইউনিয়ন। এখানকার ৭০শতাংশ মানুষ জীবিকার তাগিদে দারিদ্রসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন অতিবাহিত করে আসছেন। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারের যুবক ছেলেরা জুয়ার আসরে জড়িয়ে লাখ লাখ টাকা হারিয়ে ফেলে মাদক সেবনে জ্বড়িয়ে পড়ছেন। এতে তাদের পরিবারে চলছে অশান্তি ও সংসার বিচ্ছেদ আর বাড়ছে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। এভাবে প্রতিরাতে জুয়ার আসর চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মসহ সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং যুব সমাজ মাদক সেবনে জ্বড়িয়ে পথে বসবে। অভিযোগ রয়েছে মাদকসেবী-জুয়ারী আমিনুল ইসলাম তেলী ও আবুল হোসেন কসাইয় প্রতিরাতে কালীগঞ্জ ইউনিয়নের দুধকুমর নদের সিএনবি ঘাটের দক্ষিণে নদীর পাড়, শালমারার চরের মাঝখান, কাঠগিরাই চর, সাহেবগঞ্জের আবাসনের পাশে ভুট্টাক্ষেতের মাঝে পালাক্রমে জায়গা বদল করে চলছে এসব স্থানে প্রতিরাতে জুয়ার আসর। তবে পরিস্থিতির অবনতি দেখলেই তারা নৌকাযোগে মাঝ নদীতে নৌকার উপরে চালান জুয়ার আসর।
জুয়ারী আমিনুল ইসলাম তেলী ও আবুল হোসেন কসাই বলেন, প্রতিরাতে চেয়ারম্যান কে তিন হাজার, বিএনপি নেতা কে এক হাজার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এক হাজার টাকা এবং লাইনম্যান সাহাবুদ্দিন, মিজানুর রহমান কে ১২হাজার টাকাসহ বিভিন্ন স্থান ম্যানেজ করে আমরা জুয়ার আসর চালাই। জুয়া খেলা চালাতে প্রতিরাতে ৫০হাজার থেকে ৬০হাজার টাকা ব্যয় হয়।
কালীগঞ্জ ও নুনখাওয়া ইউনিয়নের মাইদুল ইসলাম, মিজান, রফিকুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে জুয়ারী আমিনুল ইসলাম তেলী ও আবুল হোসেন কসাইয়ের নেতৃত্বে ৩৫-৪০জনের টাকায় শালমারা চরে দীর্ঘ দুই মাস থেকে প্রতিরাতে চলছে বিশাল জুয়ার আসর এবং মাদকের আড্ডা। নুনখাওয়ার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ এক মাস থেকে নুনখাওয়া বাজারের দক্ষিণে নদী ওপাড়ে চর নুনখাওয়ায় প্রতিরাতে চলছে জুয়ার আসর। জুয়া ও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছেন আমাদের সন্তানসহ এলাকার শিক্ষার্থী ও যুবক। জুয়া বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ রুপ কুমার সরকার বলেন, জুয়া খেলার তথ্য পেলেই অভিযান চলবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোঃ রুহুল আমীন বলেন, কুড়িগ্রাম জেলায় মাদক ও জুয়া নির্মূলে আমাদের অভিযান নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে। আমরা সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।