Home সারাদেশ ‘এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে থাকলে দেখা হবে’
Mac ১৪, ২০২৪

‘এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে থাকলে দেখা হবে’

ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পণ্যবাহী একটি জাহাজ এবং ২৩ নাবিক ও ক্রুকে আটক করেছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন নোয়াখালীর জাহাজের ফাইটার হিসেবে কর্মরত আহমেদ সালেহ (৪৮)। তিনি তার স্ত্রী তানিয়া আক্তারকে একটি অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন।

অডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, একটু আগে সেহেরি খেয়েছি। এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে।

অপহৃত আহমেদ মো. সালেহ নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের সিংবাহুড়া গ্রামের মুন্সি বাড়ির মৃত সাখাওয়াত উল্লাহর ছেলে। চার ভাই এক বোনের মধ্যে মো. সালেহ সবার বড়। তার স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান রয়েছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) বিকালে আহমেদ মো. সালেহের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার স্ত্রী, তিন কন্যা ও ভাই-বোনরা সবাই কান্নাকাটি করছেন। তাদের কান্নায় চারপাশ ভারী হয়ে উঠছে।

আহমেদ মো. সালেহের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, আমার স্বামীসহ সবার মোবাইল ফোন জলদস্যুরা নিয়ে গেছে। তারা সেহেরি খেতে দিয়েছে। আমার স্বামী আমাকে অডিও বার্তা পাঠাইসে। সেখানে বলেছে, একটু আগে সেহেরি খেয়েছি। এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে। আর যোগাযোগ করতে পারব কিনা জানি না। আমার মেয়েদের দিকে নজর রাখিও। আমার জন্য দোয়া কইর।

আহমেদ মো. সালেহের মেয়ে তাসফি (১৪) বলেন, আমার বাবা আমাকে কল দেয় না। আমাদের সঙ্গে কথা কয় না। কই পামু তারে। কবে আসবে বাবা? আমার বাবারে আইনা দেন।

আহমেদ মো. সালেহের ভাই তানজিমুল হাসান ফাহিম বলেন, আমাদের বাবা-মা নেই। আমরা চার ভাই এক বোন। আমার ভাই অত্যন্ত ভালো মানুষ। তিনি কারও সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা পর্যন্ত বলতেন না। তিনি আমাদেরকে বড় করেছেন। তার অপহরণের খবর পেয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। উনার মতো মানুষ হয় না। যত দ্রুত সম্ভব সরকার সবাইকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক। এটাই আমাদের চাওয়া।

সালেহের একমাত্র বোন জান্নাতুল ফেরদাউস রানী বলেন, আমার ভাইয়ের তিনটা মেয়ে ও স্ত্রী আছে। তার মেয়ে খালি কান্না করতেছে। আর বাবার খবর জিজ্ঞেস করছে। আমার ভাবি বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। আমার ভাই অত্যন্ত ভালো মানুষ। তার মতো ভালো মানুষ আমি আর দেখি নাই। সব সময় তিনি হাসিমুখে কথা বলতেন।

জানা গেছে, অপহৃত জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। যার নাম এমভি আবদুল্লাহ। পণ্যবাহী জাহাজটি কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই। বুধবার (১৩ মার্চ) মালিকপক্ষ জিম্মি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহতে জিম্মি হন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জাহাজটি জলদস্যুর কবলে পড়ে। এরপর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়া নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে দস্যুরা। বর্তমানে নাবিকদের ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *