Home ধর্মীয় সংবাদ পবিত্র শবেবরাত আজ
ফেব্রুruari ২৫, ২০২৪

পবিত্র শবেবরাত আজ

পাপ থেকে সর্বান্তঃকরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিষ্কৃতি লাভের অপার সৌভাগ্যের রাত আজ। দিবসের আলো পশ্চিমে মিলিয়ে যাবার পরই শুরু হবে কাঙ্ক্ষিত রজনি, পবিত্র শবেবরাত। হাদিসে এটাকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ কিংবা মধ্য শাবানের রাত্রি নামে অভিহিত করা হয়েছে।

বর্ণিত আছে যে, রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নূরের তাজাল্লি পৃথিবীর কাছে আসমানে প্রকাশ পায়। তখন আল্লহপাক বলতে থাকেন—আছে কি কেউ ক্ষমাপ্রার্থী? যাকে আমি ক্ষমা করব? আছে কি কেউ রিজিকপ্রার্থী? যাকে আমি রিজিক প্রদান করব? আছে কি কেউ বিপদগ্রস্ত? যাকে আমি বিপদমুক্ত করব? আল্লাহতায়ালার মহান দরবার থেকে প্রদত্ত এ আহ্বান অব্যাহত থাকে ফজর অবধি।

বস্তুত আল্লাহ সুবানাহু তায়ালার নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভের এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেয় লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান। অতএব, প্রতিটি কল্যাণকামী মানুষ এ সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে থাকেন। মহান আল্লাহর  ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন হয়ে রাত অতিবাহিত করেন। তাত্পর্যপূর্ণ এই রাতে বিশেষ বরকত হাসিলের মানসে মুসলিম সম্প্রদায় নফল নামাজ আদায় ও কুরআন তেলাওয়াত, ইস্তেগফার, ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আসকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়ায় মশগুল থাকেন। শবেবরাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামে অভিহিত করা হয়। ‘লাইলাতু’ একটি আরবি শব্দ, আর ‘শব’ শব্দটি ফারসি। দুইটি শব্দের অর্থই হলো রাত। অন্য পক্ষে ‘বারাআত’ শব্দের অর্থ হলো নাজাত, নিষ্কৃতি বা মুক্তি। এ রাতে বান্দারা মহান আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে মার্জনা প্রার্থনা করে থাকেন। এ কারণে এ রাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা শবেবরাত বলা হয়। শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে পবিত্র শবেবরাত পালিত হয়। লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানের পক্ষকাল পরই আসবে রহমত বরকত নাজাতের মাহে রমজান।

আগামী ১২ বা ১৩ মার্চ প্রথম রোজা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী বিশ্বকোষ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘ইরান ও ভারতীয় উপমহাদেশে এ মাসের একটি রজনিকে ‘শব-ই-বরাত’ বলা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোন কোন দেশের কোন কোন এলাকায় শবে বরাত ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। আরববাসীরা এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’ বলেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়ার কিছু এলাকা ছাড়া ঘটা করে শবেবরাত কোথাও পালনের রেওয়াজ নেই। পবিত্র মক্কা-মদিনায় শবেবরাত বলে কিছু নেই।

সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, কেবল এই নিসফে মিন শাবান বা শবেবরাতেই নয়, প্রতি রাতেই মহান আল্লাহর তাজাল্লি নেমে আসে শেষ আসমানে। হযরত আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহে ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন: প্রতি রাত্রে শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান বারাকাতপূর্ণ রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। যে আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করবে, আমি তাকে তা দান করব। যে আমার কাছে মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দেব।’

মুসলিম শরিফের এক বর্ণনায় আছে, তারপর মহান রব হাত বাড়িয়ে দেন এবং বলেন, কে আছে যে এমন লোককে করজ দেবে যিনি ফকির নন, না অত্যাচারী এবং সকাল পর্যন্ত এ কথা বলতে থাকেন— (সহীহ বুখারী ১১৪৫, মুসলিম ৭৫৮)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এই শাবান মাসে বেশি-বেশি নফল রোজা রাখতেন। রমজানের প্রস্তুতির মাস হিসেবে তিনি এ মাসকে পালন করতেন। শবেবরাতের বরকত, ফজিলত ও মর্যাদা নিয়ে বেশকিছু হাদিসের বর্ণনা আছে।

এদিকে শবেবরাত উপলক্ষ্যে আগামীকাল সোমবার সরকারি ছুটি। এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পৃথক পৃথক বাণীতে পবিত্র শবেবরাতের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সবার প্রতি মানবকল্যাণে ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *