কোকো ছাড়া পাচার হওয়া কারও অর্থই ফেরত আসেনি
বিদেশে পাচার হওয়া কত টাকা ফেরত আনতে পেরেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেছেন, একটা উদাহরণ আমাদের কাছে আছে- সিঙ্গাপুরে পাচার হওয়া ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার আমার ফেরত এনেছি। এই টাকা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরফাত রহমান কোকোর ছিল।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রকাশিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া বেনামি ঋণ ও অর্থপাচার বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।
অর্থপাচারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএফআইইউর প্রধান বলেন, দেশের অর্থপাচারের সিংহভাগই হচ্ছে বিদেশি বাণিজ্যের মাধ্যমে। অর্থাৎ আন্ডার ইনভয়েসিং আর ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থ বিদেশে চলে যায়। তাই গত অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এলসি মনিটরিং করে যাচ্ছে। এতে অর্থপাচার অনেকটাই কমে এসেছে।
মানি লন্ডারিংয়ের ৮০ শতাংশ হয় ব্যাংকের মাধ্যমে
বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, মানি লন্ডারিংয়ের ৮০ শতাংশ হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক যদি এটি বন্ধে সহযোগিতা না করে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তাই অর্থপাচার রোধে ব্যাংকারদের আরও সচেতন হতে হবে। তাছাড়া ব্যাংকারদের অর্থপাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা আরও বেশি সচেতন হলে পাচার অনেকটাই কমে যাবে। এ ছাড়া অর্থপাচার ও সন্দেহভাজন ঋণ বন্ধ করতে শক্তিশালী রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও জরুরি। না হয়, এগুলো বন্ধ সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
মাসুদ বিশ্বাস বলেন, একবার যদি মানি লন্ডারিং হয়ে চলে যায়, সেটা ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন। সেটা আর ফিরে আসে না। আমরা ২০১২ সালে এমএলএ-অ্যাক্ট করেছি। আমরা ১০টি দেশে এমএলএ করার জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে।
এখন পর্যন্ত বিদেশে পাচার হওয়া কত টাকা ফেরত আনতে পেরেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং একটা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম। এখানে বহু পক্ষ জড়িত থাকে, বহু দেশ জড়িত থাকে। আমাদের দেশের আইন আর অন্য দেশের আইন এক নয়। আমরা কিছু আছি সিভিল ল’ কান্ট্রির দেশ, কিছু আমি কমন ল’ কান্ট্রির দেশ। এটা নিয়েও ভাববার আছে। একটা উদাহরণ আমাদের কাছে আছে, সিঙ্গাপুরে পাচার হওয়া ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার আমার ফেরত এনেছি। এটা কোকোর (আরাফাত রহমান) টাকা ছিল।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিশ্বাস বলেন, বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে দুদক মামলা করেছে ৪৭টি, সিআইডি ১০টি এবং এনবিআরের বিশেষ সেল ২টি। এগুলো এখনো এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।