নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে জবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ: পাল্টাপাল্টি মামলা
তৌকির আহমেদ, জবি প্রতিনিধি:
নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে সরস্বতী পূজা চলাকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দুই গ্রুপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ১৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ সহ ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
(শুক্রবার) সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে এ মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
দায়ের করা একটি মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির অনুসারী নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবিদ ইশরাক নিলয় বাদী হয়ে মামলা করেন। তিনি মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করেন।
আসামিরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর মুকিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিব তালুকদার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জয় সরকার অর্জুন, নিরব, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের হৃদয় রানা, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের আরাফাত, অপু সাহা, সাজিদ ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সোহান। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে আরেক মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে সভাপতি গ্রুপের ৭ জনকে আসামি করে পাল্টা মামলা করেন।
এই মামলার আসামিরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক মায়েল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য পারিজাত বিশ্বাস, ছাত্রলীগের কর্মী নৃবিজ্ঞান বিভাগের গাজী শামসুল হুদা, রাহুল আমিন, রিয়াদ আফ্রিদি ও ইতিহাস বিভাগের চয়েন দাস।
এদিকে দুই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রথম মামলার বাদী আবিদসহ ৫/৬ জন সহপাঠী নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্টার কাবাব হোটেলে যাবার পথে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আসামি মুকিত, আরাফাত, সোহান, জয়, অপু, নিরব, রাকিব, হৃদয়, সাজিদসহ ২০/২৫ জন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়িভাবে লোহার রড, বাঁশের লাঠি, স্টিলের পাইপ, হাতুরিসহ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বাদী, তার বন্ধু ইসমাইল হোসেন তাফসির ও বড় ভাই বাতেন বিল্লাহ গুরুতর জখমসহ আহত হয়। এ ঘটনার পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে বাহাদুর শাহ পার্ক জামে মসজিদের সামনে আরেক মামলার বাদী মাহমুদুর রহমানসহ তার বন্ধুরা আড্ডা দেয়ার সময় আসামি গাজী শামসুল, চয়েন, পারিদাস, প্রান্ত, রাহুল, মায়েল রিয়াদসহ ২০/২৫ জন হামলা করে। এতে মাহমুদুরসহ কয়েকজন আহত হয়।
এরআগে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঝামেলা হয়। এই ঘটনার সূত্রপাতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা সরস্বতী পূজার দিনে বাহাদুর শাহ পার্কে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ক্যান্টিনের ভিতরে লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি করতে দেখা যায় দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের। এতে পূজা চলাকালীন ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ছাত্রলীগের কাউকে বহিষ্কার করা হয়নি।