আমরা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে : ড. ইউনূস
নিজেদের প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখল’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জীবনে সবচেয়ে ‘ভয়ঙ্কর’ পরিস্থিতিতে পড়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার বাড়িতে এসে একজন বলল, এটা আমার বাড়ি, আপনি চলে যান।’’
মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোড়ে অবস্থিত টেলিকম ভবনের নিচতলায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “গত চারদিন ধরে এখানে অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে। আজ আমাদের অত্যন্ত দুঃখের দিন। আপনাদের ১২টায় এখানে ডেকেছিলাম। আমিও ১২টায় আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল যে, আমাকে বলা হয়েছে, আপনি আসলে ভালো হবে না। এমনকি এখনও আসলে ভালো হবে না। তারপরও সাহস করে এসেছি। আমরা যে অত্যন্ত দুঃখে পড়ে গেছি, কষ্টে পড়ে গেছি, সেটা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতেই আজকে ডেকেছি। আমরা একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছি। অতি সম্প্রতি আমরা এই ভবনে উঠেছি। আমরা আগে যখন গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে ছিলাম, তখন সেখানেই ছিলাম। যখন আমাদের যাবার পালা হল, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, একটা বিল্ডিং করি, সেখানেই আমরা সবাই শান্তিতে কাজ কর্ম করতে পারব। স্বপ্নের ২০ তলা আমরা সবাই মিলে দাঁড় করিয়েছি।”
ড. ইউনূস বলেন, “যখন আমরা এই বিল্ডিংয়ে উঠি তখন খুব আনন্দ পেয়েছিলাম। এখানে আমরা কাজ করছি, দেশ-বিদেশ থেকে লোক আসছে। হঠাৎ চার দিন আগে দেখলাম বাইরের কতগুলো লোক এসে এটা জবর দখল করে ফেলল। তাদের কাছে আমরাই বাইরের লোক হয়ে গেলাম। তারা তাদের নিয়মে চালানোর চেষ্টা করছেন, আমরা বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে। আমরা পুলিশের কাছে গেলাম। বললাম, আপনারা এসে ঠিক করে দেন। পুলিশ কোনো গুরুত্বই দিল না। তারপর এসে একবার ঘুরে গেল। তারা এখানে কোনো অসুবিধা দেখল না। আমরা বললাম, তারা তালা দিয়ে যাচ্ছে, আবার খুলে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা কোন জগতে এসে পড়লাম। এখনও সেই পরিস্থিতি বিরজমান। এখানে বসে কথা বলছি, আমরা জানতাম না যে, এখানে আমাদের বসতে দেবে কী দেবে না? এটা তাদের এখতিয়ারের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা বহু রকমের দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাই, এমন দুর্যোগ আর কোনোদিন দেখিনি। এখন আমাদের গতি কী? দুনিয়ার সামনে আমাদের কাজটা কী হবে? আমরা এখন দুনিয়ার সামনে কী বলব? কী হয়েছে আমাদের এখানের ঘটনাটা? আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে আমরা জিজ্ঞাসা করি, এভাবে একটা দেশ চলে কী করে? এটা ব্যাখা করার কিছু নেই। আজ সকাল থেকে শুনছি, অফিসের সামনে ঝাড়ু নিয়ে মহড়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালেও কয়েকজন নারী ঝাড়ু হাতে টেলিকম ভবনের সামনে মিছিল করেন। তারা কেউ ইউনূসর কাছে টাকা পান বলে দাবি করেন, আবার কারো দাবি, মোবাইলের কল রেট অনেক বেশি এ কারণে তারা ঝাড়ু হাতে নেমেছেন।
সেই প্রসঙ্গ ধরে ইউনূস বলেন, “এভাবে দেশ চলছে কীভাবে। আমাদের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল হচ্ছে। আমরা আদালতের শরণাপন্ন হব।”