Home বানিজ্য টানা দরপতনে শেয়ার বাজার আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা
জানুuari ২৯, ২০২৪

টানা দরপতনে শেয়ার বাজার আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা

টানা দর পতনের মুখে পড়েছে দেশের শেয়ার বাজার। ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের পর গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন দিনই বাজারে বড় দরপতন হয়েছে। গতকাল রবিবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও সূচকের বড় পতনে লেনদেন শুরু হয়েছে। এদিন এই বাজারে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দরই কমেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র। এদিকে টানা দরপতনে আতঙ্কে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। তাদের জিজ্ঞাসা, সামনে বাজার কি আরও পড়বে?

বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, দীর্ঘদিন ফ্লোরপ্রাইস থাকার কারণে অনেক বিনিয়োগকারী প্রয়োজনের সময় তাদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেননি। সে সময় তারা ঋণ করে প্রয়োজন মিটিয়েছে। ফলে ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের পর একদিকে যেমন শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। তেমনি অনেক অতিমূল্যায়িত শেয়ারের দরও সমন্বয় হচ্ছে। এ জন্য বাজারে দরপতন হচ্ছে। তবে টানা এই দরপতনে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা। গতকাল একটি সিকিউরিটিজ হাউজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিনিয়োগকারী অনেকটা হতাশার সুরে বলেন, বাজার কি আরও পড়বে? কী হবে সামনে?

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের পর গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮০ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট কমেছে। গতকাল কমেছে ৭৭ পয়েন্টের বেশি। বাজারের এ দরপতন প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, অতিমূল্যায়িত কোম্পানির শেয়ারদর কমায় বাজারে এ দরপতন বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন বাজারে ফ্লোরপ্রাইস থাকার কারণে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেনি। অনেকেই ঋণ করে চলেছেন, তাই এখন ফ্লোর উঠিয়ে দেওয়ায় শেয়ার বিক্রি করছেন। তবে আশার কথা হলো—ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের পর ফান্ডামেন্টালি শক্তিশালী কোম্পানির শেয়ারদর কিন্তু আরও বেড়েছে। ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। বিশিষ্ট পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ এ প্রসঙ্গে ইত্তেফাককে বলেন, যারা মার্জিন লোন নিয়ে শেয়ার কিনেছে, তাদের শেয়ার বিক্রির কারণেই সূচক কমেছে বলে আমার মনে হয়। তবে বাজার খুব শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি।

ডিএসই তথ্য বলছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া, অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৩৭ পয়েন্টে আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৩.৫৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ দিন এই বাজারে ৮৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৭০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। গতকাল ডিএসইতে লেনদেনকৃত মোট কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৭টি কোম্পানির, কমেছে ৩১১টির। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দেশের প্রধান এই শেয়ার বাজারে গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০টি কোম্পানি হলো: ওরিয়ন ইনফিউশন, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, ফু-ওয়াং ফুড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স।

অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৬৫ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। গতকাল সিএসইতে লেনদেনকৃত মোট ২৭০টি কোম্পানির মধ্যে ৪৮টির দাম বেড়েছে। কমেছে ২০৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির দর।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *