আইসিজের রায়: কার কী প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আদেশে ইসরায়েলের অভিযান বন্ধের নির্দেশ না থাকায় তা দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনিদের হতাশ করেছে। যদিও আদেশে গণহত্যা রোধে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ রায়ে খুশি নন পশ্চিম তীরের রামাল্লা সিটি কাউন্সিলের সদস্য লুবনা ফারহাত। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে তিনি জানিয়েছেন আইসিজের রায় তাকে কিছুটা হলেও হতাশ করেছে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
লুবনা ফারহাত বলেন, এই মামলা দায়ের করার জন্য আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তবে ফিলিস্তিনিরা যা চেয়েছিল তা হলো তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি। আইসিজের রায়ে গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এই রায় অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ ‘বাড়িয়ে তুলবে’ এবং তাদের মধ্যে দায়মুক্তির অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে।
তবে আইসিজের আদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকিও। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আইসিজের বিচারকেরা (গাজার) প্রকৃত চিত্র ও আইনের সঠিক মূল্যায়ন করেছেন। তাঁরা মানবতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
এদিকে আইসিজের আদেশের পর আগের কথাই বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর মতে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলা ‘আপত্তিকর’ একটি বিষয়। নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলের নিজেদের রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার যে আহ্বান দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছিল, তা প্রত্যাখ্যান করেছে আইসিজে।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার অভিযোগ এনে গত মাসের শেষের দিকে আইসিজেতে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই দিন মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবীরা গাজায় যুদ্ধ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গণহত্যার অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়।
গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ পড়ছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) বিচারকেরা। আজ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে
গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ পড়ছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) বিচারকেরা। আজ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরেছবি: রয়টার্স
ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা ঠেকানোর পদক্ষেপ নিতে ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। একই সঙ্গে নির্বিচার হামলায় বিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আইসিজের নির্দেশনার পর একে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটি বলেছে, ইসরায়েলকে একঘরে করতে এবং গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অপরাধগুলো তুলে ধরতে আইসিজের রায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
আইসিজের আদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকিও। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আইসিজের বিচারকেরা (গাজার) প্রকৃত চিত্র ও আইনের সঠিক মূল্যায়ন করেছেন। তাঁরা মানবতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
এদিকে আইসিজের আদেশের পর আগের কথাই বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর মতে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলা ‘আপত্তিকর’ একটি বিষয়। নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলের নিজেদের রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার যে আহ্বান দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছিল, তা প্রত্যাখ্যান করেছে আইসিজে।
তবে আইসিজের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, ইসরায়েলকে নৈতিকতা শেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই আইসিজের।
আইসিজের আদেশের পর আদালতের বাইরে মামলাকারী দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি পানদোর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া আদালতের এ নির্দেশ আসলে কোনো কাজে আসবে না। আমি আশা করেছিলাম, আদেশে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি যুক্ত থাকবে। তারপরও আদালত যেসব নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে আমি সন্তুষ্ট।’
এ সময় উপস্থিত এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ইসরায়েল আইসিজের নির্দেশ মানবে বলে মনে করেন কি? জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলের বিষয়ে তিনি কখনোই আশাবাদী ছিলেন না। তবে তাঁর প্রত্যাশা, ইসরায়েলের ‘শক্তিশালী বন্ধুরা’ দেশটিকে নির্দেশগুলো মেনে চলার পরামর্শ দেবে।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা অবিলম্বে আইসিজের আদেশের কার্যকর বাস্তবায়ন চায়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক্স বার্তায় আইসিজের আদেশকে ‘মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।