অবসরপ্রাপ্ত জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার মৃত্যুতে শোকাহত এলাকাবাসী
রুহুল আমিন
ঘাটাইল উপজেলা প্রতিনিধি
টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার শ্রদ্ধেয় শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মন গত ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ৯:৩০ মিনিটে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেছেন। তিনি পেশায় (অবসরপ্রাপ্ত) জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের জেলা হিসাব সহকারী ছিলেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিলো ৭৫ বা তদুর্ধ। তার এ মৃত্যুতে এলাকায় শোকের মাতম বইছে।
তিনি ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ঢলুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। গত ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ বেলা আনুমানিক ১২ টার দিকে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। শ্রদ্ধেয় শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মনের পুত্র বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের টাংগাইল জেলা শাখার সভাপতি শ্রী পরিমল চন্দ্র বর্মন সুত্রে জানা যায়, ধর্মীয় রীতি-নীতি অনুযায়ী প্রয়াত শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মন মহাশয় কে সমাধীস্থ করা হয়।
২০ জানুয়ারি, ২০২৪ (শনিবার) বিকাল ৫ টার দিকে শালিকা বাজার কমিটি, গৃহবধু রাইস এন্ড মসলা মিল, শালিকা- ঢলুয়া সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে সদ্যবিদায়ী শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মনের সমাধীতে তাজা ফুলের আবরণে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী প্রদান করা হয়।এবং এক মিনিট দাড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শালিকা বাজার কমিটির সভাপতি ডাঃ মোঃ হাফিজ উদ্দিন, শালিকা-ঢ্লুয়া সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম কফিল,
শালিকা-ঢ্লুয়া সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রদীপ কুমার রায়, শালিকা-ঢ্লুয়া সমবায় সমিতির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ হায়েত আলী, ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট সার ব্যবসায়ী মোঃ কোমর উদ্দীন, পল্লীকেয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাবিজুল ইসলাম রানা, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক রুহুল আমিন রুলন, পল্লীকেয়ার সমবায় সমিতির একাউন্টেন্ট বাচ্চু খান ও মৃতের পরিবারবর্গ সহ আরো অনেকে।
শালিকা বাজার কমিটির সভাপতি ডাঃ মোঃ হাফিজ উদ্দিন বাংলার দূত কে জানায়, শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মন একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন এবং আমাদের এলাকার প্রথম শিক্ষিত লোক ছিলেন। তিনি নিজের জীবদ্দশায় কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেন নাই। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
গৃহবধু রাইস এন্ড মসলা মিলের মালিক এবং শালিকা-ঢলুয়া সমবায় সমিতির সভাপতি বিএনপি সমর্থক মোঃ সিরাজুল ইসলাম কফিল বলেন, আমরা শুধু একজন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকেই হারাইনি আমরা আমাদের অভিবাবক কে হারিয়েছি।আমার জানামতে তিনি তাহার কর্ম জীবনে সততার সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
শালিকা-ঢলুয়া সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রদীপ কুমার রায় জানান, আমাদের সমতির ধারা অনুযায়ী আমরা আমাদের এলাকার গন্যমান্য, সমাজসেবক, হতদরিদ্র, বিশিষ্ট গুনীজন ও আমাদের সমতির সদস্যবৃন্দ কে বিশেষ সম্মাননা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই। তিনি আমাদের সমিতির সম্মানিত সদস্য ছিলেন পাশাপাশি তিনি আমার মামা। আমার মামার কার্যকলাপ খুবই প্রসংশনীয় এবং আমি আমার মামাকে সবসময় অনুসরণ করি। এবং আমার মামা শ্রদ্ধেয় শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মন সাহেবের যেনো গোলকধামে স্থান হয় এই প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তার কাছে।
১০ নং রসুলপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ হায়েত আলী বলেন, তিনি আমাদের মুরব্বি ছিলেন, আমরা তার মৃত্যুতে শোকাহত। ১০ নং রসুলপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ জলিল আমাদের জানায়, তিনি শুধু আমাদের অভিবাবক ছিলেন না তিনি ছিলেন আমাদের বটবৃক্ষ। আমরা তার ছায়াতলে গিয়ে আশ্রয় নিতাম।
পাশের বাড়ির মোঃ শাহজাহান আলী মন্ডল সাহেব বলেন, তিনি আমার বাড়ির পাশের লোক তিনি খুব ভালো ও নীতিবান লোক ছিলেন।
মৃতের ভাতিজা শ্রী শ্যামল চন্দ্র সরকার (বিএ, কাব্যতীর্থ) তার চাচার সমাধীতে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। এবং তার চাচার হয়ে সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং সকলের কাছে তার চাচার জন্য স্বর্গীয় আশির্বাদ কামনা করে।
শ্রী সুনীল চন্দ্র বর্মনের পুত্র ও বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের টাংগাইল জেলা শাখার সভাপতি শ্রী পরিমল চন্দ্র বর্মন বলেন,
আজ আমার বাবার সমাধীতে তারা যে সম্মান দিলেন তা আমার স্মৃতির পটে লিখা থাকবে এবং তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো। ভগবান সবার মঙ্গল করুক।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এলাকার হিন্দু- মুসলিম সম্প্রীতি অনেক আগে থেকেই। আমরা তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাই এবং তারাও আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করে। আমরা সব সময় ভাই ভাই হিসেবে চলাফেরা করি। আমরা বিশ্বাস করি আমরা সবাই মানুষ।