ব্যালট পেপার বিতরণ শুরু সোমবার, প্রথম দিন যাবে ১৩ জেলায়
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার ঢাকা থেকে জেলা পর্যায়ে পাঠানো শুরু হচ্ছে সোমবার।
তিনটি প্রেস থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসহ ব্যালট পেপার সরাসরি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর পর জেলা প্রশাসকের ট্রেজারি শাখায় সেসব সংরক্ষণসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
এরপর জেলা থেকে যথাসময়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হবে ব্যালট পেপার।
নির্বাচন কমিশন আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যার সমান প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর নাম ও প্রতীকসহ ব্যালট পেপার ছাপানোর ব্যবস্থা করে।
এবার ৩০০ আসনে ১১ কোটি ৯৬ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “সোমবার থেকে জেলা পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ব্যালট পাঠানো হবে। ভোটের দিন জেলা থেকে সব উপজেলায় ব্যালট পাঠানো সম্ভব হবে না। কারণ ভোটের আগের দিন কেন্দ্র অনুযায়ী ব্যালট সেট করতে হবে, বাছাই করতে হবে। সেগুলো আগেই পৌঁছাতে হবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে।”
প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া বা বাতিল নিয়ে মামলাগুলো মাথায় রেখে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যালট মুদ্রণ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
অশোক কুমার জানান, সংসদ নির্বাচনে মহানগর, জেলা ও উপজেলা সদরসহ অধিকাংশ এলাকায় ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে ইসির। দুর্গম পার্বত্য এলাকা, হাওর, চরাঞ্চলসহ জেলা-উপজেলা-মহানগর থেকে বেশি দূরের যেসব কেন্দ্রে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব না, সেসব কেন্দ্রের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সোমবার ১৩ জেলায় বিতরণ
রোববার ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব (ক্রয় ও মুদ্রণ) মুহাম্মদ এনাম উদ্দিন জানান, সোমবার প্রথমদিনে ১৩টি জেলায় ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপারের সঙ্গে সম্পর্কিত ফরম এবং স্ট্যাম্প প্যাড পাঠানো হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে।
সোমবার গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস থেকে পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা ও রাঙ্গামাটি; বিজি প্রেস থেকে জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝালকাঠি ও ভোলা এবং সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে বরগুনা, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলার ব্যালট পেপার বিরতণ করা হবে।
জেলাভিত্তিক ব্যালট পেপারের বিতরণের তারিখ ও স্থান উল্লেখ করে ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য নির্বাচনী সামগ্রী সরবরাহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ইসির নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত প্রতিনিধিকে (জেলা নির্বাচন অফিসার, সহকারী কমিশনার) প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট ছাপাখানা থেকে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করতে হবে। নির্বাচনী এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর নাম ও প্রতীক এবং ভোটার সংখ্যা যাচাই করে ব্যালট পেপার প্রতিনিধির হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ছাপাখানা থেকে ব্যালট পেপার ও পোস্টাল ব্যালট বুঝে নেওয়ার আগে নির্বাচন ভবনের গোডাউন থেকে স্ট্যাম্প প্যাড সংগ্রহ করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপারের সঙ্গে সম্পর্কিত ফরম এবং স্ট্যাম্প প্যাড জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ট্রেজারি শাখায় সংরক্ষণসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব সামগ্রী সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো অসংগতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
৩০০ আসনে ভোটার সংখ্যা
এবার ৩০০ সংসদীয় আসনে প্রায় ১২ কোটি ভোটার রয়েছে। ভোটার সংখ্যা যত, ব্যালটও ততগুলো ছাপা হবে।
সবচেয়ে বেশি ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৬ ভোটার রয়েছে গাজীপুর-২ আসনে। আর সবচেয়ে কম ভোটার ঝালকাঠি-১ আসনে, ২ লাখ ১২ হাজার ১২ জন।
ঢাকা জেলার ২০টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার ঢাকা-১৯ আসনে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ জন। এর আগে ২০১৮ সালে এ আসনে দেশের সর্বোচ্চ ভোটার ছিল।
গেল নভেম্বরের শুরুতে আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা করার কাজ শেষ হয়। এরপর ৩০০ আসনের ভোটকেন্দ্রের গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন আসনভিত্তিক ভোটার তালিকাও প্রকাশ করেছে নভেম্বরে (গেজেটে সংখ্যা কয়েকজন কমবেশি হতে পারে)। সেই অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার এখন ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। তাদের মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ; ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং ৮৫২ জন হিজড়া।