খাগড়াছড়িতে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের কাছে
বিস্তৃত সবুজ পাহাড়ে ভোটের হাওয়া। আনন্দ আমেজ এর ভিন্ন অনুভুতির আড়ালে আছে নানা হিসাব-নিকাশ। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ভিন্ন পিটে খাগড়াছড়ি ২৯৮নং আসনে আছে ভোটের রাজনৈতিক সূত্র। যে হিসেবে ভুল হলেই পরাজয় নিশ্চিত। এতো সব এর পরও খাগড়াছড়িতে ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত আওয়ামী লীগ ছুটছেন ভোটারদের কাছে।
সকল সম্প্রদায়ের মানুষের দ্বোরগোরাই নিজের সালাম পৌঁছে দিতে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা নিজেই ভোটারদের আর্শিবাদ নিতে মাঠে নেমেছেন। এদিকে দলীয় নেতাকর্মীরা সক্রিয় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় ছুটছেন প্রচারণায়। প্রচারণায় পথসভা, প্রচারপত্র বিতরণ করা হয় এ সময়। এরই মধ্যে গঠন করা হয়েছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।স
নির্বাচনী মাঠে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতা কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, নির্মলেন্দু চৌধুরী, মংক্যচিং চৌধুরী, চাইথো অং মারমা, মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, দিদারুল আলম দিদার, এড.আশুতোষ চাকমা, এমএ জব্বার, নিলোৎপল খীসা, খোকনেশ্বর ত্রিপুরাসহ একাট্টা নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ের নেতারা এখনি মাঠে নেমে গেছেন। ফলে জয়ের পথে প্রচার-প্রচারণায় শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে বসে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার (নৌকা) প্রতীকের বিপরীতে মাঠে থাকা জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিথিলা রোয়াজা (লাঙ্গল), তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা (সোনালি আঁশ) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. মোস্তফা (আম)।
খাগড়াছড়িতে নানা সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। ৯টি উপজেলা, তিন পৌরসভা নিয়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি আগের চেয়ে বেশ উন্নয়নের পথে এগিয়েছে। কয়েক যুগ আগেও পার্বত্য জেলা অবহেলিত হিসেবে বিবেচনা করা গেলেও ক্ষমতার পালা বদলে পিছিয়ে পড়া খাগড়াছড়িকে সমতলের সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিগত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার পাহাড়ি এই জনপদকে সমতলের সাথে সমহারে উন্নয়নের ফলে পাল্টে গেছে এখানকার জীবনযাত্রার মান।
পাহাড়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তাসহ অবকাঠামো নির্মাণে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য তিন জেলা পরিষদ, এলজিইডি, গণপূর্ত, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রতান্ত জনপদেও। ফলে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা রূপান্তরিত হচ্ছে একেকটি শহরে।
উল্লেখ, ২৯৮নং খাগড়াছড়ি আসনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৭ ডিসেম্বর নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাকের পার্টির মোহাম্মদ হোসেন। দ্বাদশ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও হঠাৎ করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১৬ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে।
এর আগে খাগড়াছড়ি আসনে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তার মধ্যে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমীর দত্ত চাকমা ও কংগ্রেস পাটির প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন বাতিল হয়ে যায়।
সিইসির ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং অফিসাররা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে আগামী ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ করা হবে ৭ জানুয়ারি রোববার।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি সংসদীয় (২৯৮) আসনে মোট ভোটার- ৫ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৬ জন। তার মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৮৫ জন আর পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬২ হাজার ৬১ বলে খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।