অস্ট্রেলিয়ায় রেকর্ড বৃষ্টির পর ডুবল বিমানবন্দর, শহরে ঘুরছে কুমির
রেকর্ড বৃষ্টিপাতের জেরে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে প্রদেশটির একটি বিমানবন্দর প্লাবিত হয়েছে। এমনকি পানিতে প্লাবিত শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে কুমির, এমন দৃশ্যও সামনে এসেছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় হাজারও মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেকর্ড বৃষ্টিপাত অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের সুদূর উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করছে। কর্তৃপক্ষের ধারণা, অস্ট্রেলিয়ার এই অঞ্চলে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও বহু মানুষ পানিতে আটকা পড়ে আছেন।
বিবিসি বলছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে বন্যা দেখা দেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার এই অঞ্চলের যেসব চিত্র সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কেয়ার্নস বিমানবন্দরের বিমানগুলো ডুবে গেছে, শহরের মাঝখানে একটি কুমির দেখা যাচ্ছে এবং লোকেরা নৌকায় করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।
অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যু বা কারও নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া যায়নি, তবে গত শনিবার কেয়ার্নসে বজ্রপাতের পর ১০ বছর বয়সী এক মেয়ে আহত হয় এবং তার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
প্রবল বৃষ্টিপাত আরও ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে শত শত মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। অনেক বাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে, বিদ্যুৎ ও রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং অনেক এলাকায় নিরাপদ খাবার পানীয় কমে যাচ্ছে।
কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার স্টিভেন মাইলস অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেছেন, ‘আমি যতটা মনে করতে পারি প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়টি (অতীতের তুলনায়) সবচেয়ে খারাপ’। তিনি বলেন, ‘আমি কেয়ার্নস শহরের স্থানীয়দের সাথে কথা বলছি… এবং তারা বলছেন, তারা (এর আগে) এরকম কিছু কখনও দেখেনি।’
তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমাদের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- ক্রমবর্ধমান পানিতে আটকে পড়াদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া। যেমন কেয়ার্নসের প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার (১১০ মাইল) উত্তরে প্রত্যন্ত শহর উজাল উজালের বাসিন্দারা এমন পরিস্থিতিতে আছেন।
সেখানে জরুরি কর্মীরা একদল লোকের কাছে পৌঁছাতে না পারায় অসুস্থ শিশুসহ নয়জন হাসপাতালের ছাদে রাত কাটিয়েছেন। সোমবার তাদেরকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে, কিন্তু মাইলস বলেছেন, পুরো শহরটি এখন খালি করে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া দরকার।
স্টিভেন মাইলস আরও বলেন, ‘এর পরে আমাদের খাবার পানীয়, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ এবং টেলিযোগাযোগ, রাস্তাগুলোর অবস্থা সম্পর্কেও উদ্বেগ রয়েছে। পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক রাস্তা অবরুদ্ধ এবং আমরা সেখানে আকাশপথেও যেতে পারছি না।’
পূর্বাভাস প্রদানকারীরা বলেছেন, সোমবারের বেশিরভাগ সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার ওই অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। তবে মঙ্গলবার বৃষ্টি কমতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।