মির্জা ফখরুলের অনুপস্থিতি উপলব্ধি করছেন ওবায়দুল কাদের
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে থাকায় বাগ্যুদ্ধের জবাবের অনুপস্থিতি উপলব্ধি করছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মনোভাব প্রকাশ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলামকে মিস করছেন কি না, এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘না…থাকলে ভালো হতো। এই যে…মানে এটা…এমন একটা বিষয় যে কথাবার্তার মধ্য দিয়ে এটা একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা।
এতে গণতন্ত্রই লাভবান হয়। তো, এখন এখানে আইনের ব্যাপার যখন বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তো করণীয় কিছু নেই, থাকলে ভালো হতো। উনি আমার কথার জবাব দেন, আবার আমি তাঁর কথার জবাব দিই।…এটা একটা ইন্টারেকশন এক্সচেঞ্জ (পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া বিনিময়)। এটা একটা ফাইন এক্সচেঞ্জ।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আমি অভ্যাসগতভাবে “মিস” করা বলি, ওইভাবে বলতে চাই না। আমি বলছি, ওনার সঙ্গে প্রতিদিনই কাউন্টার (পাল্টাপাল্টি) কথাবার্তা হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনিও আক্রমণ শাণিত করেন। তো সেটার জবাব দিতে ভালো লাগে। সেদিকটা অবশ্যই এখন অনুপস্থিত। এটা ঠিকই। মিস-টিস এইগুলা বলতে চাই না।’
ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, সারা দেশে আগুন–সন্ত্রাস করে, বিএনপি কোন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, এটা প্রশ্ন। এটা নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র। তাদের নাশকতার লক্ষ্য হচ্ছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে নাশকতার মাধ্যমে বানচাল করা।
বিএনপির নাশকতা কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থারও দায়িত্ব আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবে। এই নির্বাচন আমাদের সফল করতে হবে, শান্তিপূর্ণ করতে হবে। ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য সমমনা সবার সঙ্গে আমরা বসছি, আলাপ–আলোচনা করে যাচ্ছি। দেশের মানুষকে ভয়ভীতির মধ্যে রাখার চক্রান্ত করছে বিএনপি। এর মধ্যেই ব্যাপক ভোটার উপস্থিত করতে হবে। তারা যতই নাশকতা করুক, মানুষ নির্বাচনমুখী, মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ। উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’
জোট নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জোট নিয়ে বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা, গুজব আছে। আমরা সতর্ক আছি। গুজব, গুঞ্জন, সন্ত্রাস, সহিংসতা আমাদের বিভ্রান্ত করতে পারবে না। আমরা বিচলিত হব না, আমরা সব জেনেশুনেই নির্বাচন করছি।’
জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের তারা বলেছে, তারা নির্বাচনে আছে, জোটে থাকতে চায়। তারা তো সরে যাবে বলেনি। সরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে, এটা নিয়ে আমরা আরও নিশ্চিত হতে চাই। ১৭–১৮ তারিখ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি। অস্বস্তির কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘এটাও আমাদের আরেকটা নতুন অভিজ্ঞতা, কী হবে জোট প্রার্থী যাঁরা হবেন; সেখানে স্বতন্ত্র (প্রার্থী) আছে।’
দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাহস দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উঠিয়ে দিতে পারব না। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে। আমরা তো জোর করে বসিয়ে দিতে পারি না। এখানে আপস করার সুযোগ নেই।’
বিএনপি নেতা রিজভীকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, ‘এই যে বিএনপির বর্তমান অনাবাসিক প্রতিনিধি রিজভী আহমেদ ১০–১২ জন লোক নিয়ে বের হয়। কী করে, অসুস্থ একটা লোক। রিজভীকে দেখেও আমরা না দেখার ভান করি।’
জামায়াত–বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী করতে পারে বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে তারা এক মোহনায় একাকার হবে। বিএনপি মানে জামায়াত, আর জামায়াত মানে বিএনপি। দুঃখ হয়, বিএনপির বি টিম জামায়াত; কদিন পরে জামায়াতের বি টিম হয়ে যাবে বিএনপি।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।