Home নির্বাচন ‘নিশ্চিত মনোনয়ন’ : ৫০ লাখ টাকা খোয়ালেন আ.লীগ নেতা
Disember ৯, ২০২৩

‘নিশ্চিত মনোনয়ন’ : ৫০ লাখ টাকা খোয়ালেন আ.লীগ নেতা

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নৌকার টিকেট পেতে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ করেছেন তবে শেষ মুহূর্তে নমিনেশন না পেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে যাচ্ছেন অনেক আওয়ামী লীগের অনেকে। এর মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকায় ‘নিশ্চিত মনোনয়ন’ পেতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় (৬৩)। চক্রের খপ্পরে পড়ে ৫০ লাখ টাকা খুইয়েছেন তিনি। পরে অভিযোগ পেয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নুরুল হাকিম (৩১), হাসানুল ইসলাম জিসান (২২) ও মো. হারুন অর রশিদ (২৯)।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

তিনি জানান, মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে ওই প্রতারক চক্রের এক সদস্য। সে ফোনে বলে— আমি এনএসআইয়ের ডিডি (ডেপুটি ডিরেক্টর) হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছি। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংক্রান্ত ইস্যুতে কাজ করছি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমি কয়েকজনকে বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছি। আসন্ন ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ইতিমধ্যে কয়েকজনের মনোনয়নের বিষয়টি আমি নিশ্চিত করছি।

মোবাইল ফোনে এমন পরিচয়ে কথা পরে আস্থা অর্জনের পর ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতাকে ওই প্রতারক আরও বলে, ‘আপনার মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এজন্য ৫০ লাখ টাকা নগদ দিতে হবে।’ এরপর দলের শীর্ষস্থানীয় এক নেতার কন্যা পরিচয়ে এক নারী কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয় চক্রের সদস্যরা। এভাবে মনোনয়ন পেতে প্রতারণার ফাঁদে পড়েন দীপক কুমার রায় (৬৩)।

পরে গত ২৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়নের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হলে সেখানে নাম ছিল না ওই ভুক্তভোগীর। এতে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর ভুক্তভোগী দীপক কুমার রায় বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশিদ বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের টার্গেট করে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দেশব্যাপী সক্রিয় হয়। এর ধারাবাহিকতায় চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের টার্গেট করে। ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের অভিযানে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে।

তিনি জানান, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর গ্রেপ্তার আসামি নুরুল হাকিম (৩১) নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর এক সচিব ও অপর আসামি হাসানুল ইসলাম জিসান (২২) নিজেকে অপর এক সচিবের পরিচয় ব্যবহার করে দিয়ে তিনটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়ন পাইয়ে দিবে বলে ফোন করে। এজন্য তাদের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা দিতেও বলা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে যারা আমাদের কাছে অভিযোগের মাধ্যমে জানিয়েছেন, আমরা গুরুত্বের সঙ্গে প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *