Home সারাদেশ সীমান্ত সড়কে অর্থনৈতিক বিপ্লবের হাতছানি
Disember ৩, ২০২৩

সীমান্ত সড়কে অর্থনৈতিক বিপ্লবের হাতছানি

তাজু কান্তি দে, খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ

দুর্গম পাহাড়ের বাসিন্দাদের কেউ অসুস্থ হলে মাইলের পর মাইল হেঁটে অথবা রোগীকে কাঁধে তুলে নিতে হতো নিকটস্থ হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে। নিকটস্থ হাসপাতাল মানে সেটি অন্তত ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে। দুর্গম সেই পাহাড়ে পায়ে হেঁটে চলাই ছিল যাতায়াতের একমাত্র ব্যবস্থা। তবে পাহাড়ের সে চিত্র বদলে গেছে। এখন আর রোগীকে পায়ে হেঁটে যেতে হয় না বা কাঁধেও তুলতে হয় না। বরং চান্দের গাড়ি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে খুব সহজেই চিকিৎসকের কাছে নেওয়া যায়। এতে করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একদিকে যেমন দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন তারা।

পাহাড়ে কথা হয় রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার উদয়পুর গ্রামের তারুম চাকমার সঙ্গে। তারুম বলেন, বছর তিনেক আগের কথা। আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠে। সে সময় দুই দিকে বাঁশের সঙ্গে কাপড় বেঁধে তার ভেতরে শুইয়ে প্রায় ১০ মাইল হেঁটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ডাক্তারের কাছে। কিন্তু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা যায় আমার স্ত্রী। তবে এখন আর কাউকে পায়ে হেঁটে ডাক্তার কিংবা হাসপাতালে যেতে হয় না। খুব সহজেই চান্দের গাড়িতে করে রোগীকে নিয়ে যাওয়া যায়।

তারুম চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, পাহাড়ে এখন দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়েছে। সড়ক ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় খুব সহজেই এক জায়গায় গিয়ে দিনের মধ্যেই আবার ফিরে আসা সম্ভব হচ্ছে। আগে যেখানে পায়ে হেঁটে যেতে সময় লাগতো ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা, সেখানে এখন গাড়িতে সময় লাগছে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। এছাড়া পাহাড়িদের সবচেয়ে কঠিনতম সময় ছিল রোগী নিয়ে হাসপাতাল কিংবা ডাক্তারের কাছে ছোটাছুটি। এটি এখন সড়ক ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় দ্রুততার সঙ্গে রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উঁচু-নিচু পাহাড়ের গা বেয়ে সরীসৃপের মতো নির্মিত শত শত কিলোমিটারের আঁকা-বাঁকা পিচঢালা মসৃণ পাহাড়ি সড়কগুলো অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। সড়কের পাশাপাশি বড় বড় ব্রিজ-কালভার্ট এক পাহাড়কে আরেক পাহাড়ের সঙ্গে যুক্ত করেছে। দুই-তিন দিনের গন্তব্যে এখন কয়েক ঘণ্টাতেই যাওয়া-আসা করা যায়। পাহাড়ি জনপদের মানুষগুলোর কাছে এটি স্বপ্নের মতো। মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, দেখতে পিকআপের মতো যাত্রীবাহী চান্দের গাড়ি, বাস, মাইক্রোবাস ও জিপ নিয়মিত চলাচল করছে সড়কগুলোতে। পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হওয়ায় বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যাও।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *