Home বিনোদন মাশরাফি ও সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ফেরদৌস
নভেম্বর ২৮, ২০২৩

মাশরাফি ও সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ফেরদৌস

অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেছেন। সোমবার বিকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন এই অভিনেতা। নিজের নির্বাচনি আসন নিয়ে কিছু পরিকল্পনা আছে তার। ডেঙ্গু, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে চান ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট এলাকা।

প্রশ্ন: মনোনয়ন ঘোষণার পর দুদিন অতিক্রান্ত। চারপাশ থেকে কী রকম প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

ফেরদৌস: (হেসে) টানা ফোন বেজে চলেছে। আমি ভাবিনি আমাকে নিয়ে মানুষ এ রকম উচ্ছ্বাস দেখাবেন। আমার বন্ধু, সতীর্থ, প্রতিবেশী, নবীন-প্রবীণ রাজনীতিকেরা— প্রত্যেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। খুব ভালো লাগছে। আবার একটু ভয়ও লাগছে।

প্রশ্ন: কেন? ভয় কিসের?

ফেরদৌস: এ ভালোবাসার প্রতিদান তো দিতে হবে! তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দেখা যাক, যে সংকল্প নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি, তার কতটা পূরণ করতে পারি।

প্রশ্ন: পঁচিশ বছরের অভিনয় জীবন। হঠাৎ করে রাজনীতির ময়দানে পা রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?

ফেরদৌস: আসলে আমার পেশা তো মানুষকে কেন্দ্র করেই। এক সময় কলকাতার বাইরে যখন শুটিং করতাম, বা এখন ঢাকার বাইরে শুটিং করার সময়েও প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের সুখ-দুঃখ কাছ থেকে দেখেছি। অভিনেতা হিসেবে একটা ছোট্ট কিছু করলেও তাদের মুখে হাসি ফুটতে দেখেছি। আমার সেটা খুব ভালো লাগে। তারপর যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্ত হলাম, তার সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারে গেলাম, তখন দেখলাম কী সহজে উনি মানুষের সঙ্গে মিশে যান! ঢালিউডের (কলকাতার টালিউড বা মুম্বাইয়ের বলিউডের মতোই চলতি নাম) শিল্পীদের যেকোনো বিপদে উনি পাশে এসে দাঁড়ান। তখন কিন্তু উনি সেই ব্যক্তি কোন দল কেন বা কোন আদর্শে বিশ্বাস করেন, সেটা দেখেন না। তার কাছে দেশের ওই মানুষটা গুরুত্বপূর্ণ। সেটা দেখে আমারও মনে হয়েছিল এ রকম কিছু করার কথা।

প্রশ্ন: সেই ইচ্ছা থেকেই তা হলে?

ফেরদৌস: হ্যাঁ। প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস রেখে খুব ভালো একটা কেন্দ্র (ঢাকা-১০) দিয়েছেন। এ আসনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। অভিজাত এলাকা। সেটাকে ঘিরে স্কুল, কলেজ, মন্দির-মসজিদ রয়েছে। উন্নত এলাকা; কিন্তু আমি তারপরও চেষ্টা করব যথাসাধ্য কাজ করতে।

প্রশ্ন: প্রচারের কাজ শুরু করতে পেরেছেন?

ফেরদৌস: (হেসে) এখনো পুরোপুরি শুরু করতে পারিনি। সোমবার মনোনয়নপত্র হাতে পেয়েছি। এখন সরকারি কাজগুলো শেষ করছি। সোমবার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছি। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এ বাড়ি থেকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এ বাড়িতেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বেড়ে ওঠা। সব মিলিয়ে ধানমন্ডির একটা আলাদা আবেগ রয়েছে। সেখান থেকেই শুরু করলাম আমাদের কর্মসূচি।

প্রশ্ন: আগামী দিনে রাজনীতি এবং অভিনয়ের মধ্যে কিভাবে সমতা রাখবেন?

ফেরদৌস: (হেসে) বিগত ৮-১০ বছর আমি কিন্তু ছবির সংখ্যা কমিয়েছি। ক্যারিয়ারের শুরুতে তখন আমি দু-তিন শিফটে কাজ করতাম। একসঙ্গে পাঁচটা ছবির শুটিংও করেছি। কলকাতা এবং ঢাকায় সমানতালে কাজ করেছি। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। সবাই এখন বছরে একটা বা দুটো ছবি করেন। তাই মনে হয় না অসুবিধা হবে। ইচ্ছে থাকলেই তো উপায় বেরিয়ে আসে।

প্রশ্ন: আপনি অভিনয় থেকে অবসর নিতে পারেন বলেও আলোচনা শুরু হয়েছে।

ফেরদৌস: দেখুন, বছরে একটা বা দুটো ছবি করার ইচ্ছাই রয়েছে। দেশাত্মবোধক এবং সামাজিক বার্তা থাকবে এমন ছবিই করতে চাই। আবার কখনো যদি মনে হয় যে রাজনীতিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছি, তখন ধীরে ধীরে সুচিত্রা সেনের মতো অভিনয় থেকে সরেও দাঁড়াতে পারি; কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে ভবিষ্যতের ওপর।

প্রশ্ন: রাজনীতিতে আসার পর শিল্পীদের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করেন। বিষয়টাকে আপনি কিভাবে দেখেন?

ফেরদৌস: আমি তা মানি না। অভিনেতা হিসেবে সব দর্শক নিশ্চয়ই আমাকে পছন্দ করবেন না। আবার যিনি আমাকে পছন্দ করেন, তিনি হয়তো অন্য কোনো নায়ককে পছন্দ করেন না। ছবি দেখতে গিয়ে শাহরুখ খান বা সালমান খানের মধ্যে কার ছবি দেখব, সেই সিদ্ধান্ত তো আমার। আমি যে দলের সমর্থক, তার বিরোধীরা হয়তো আমাকে নায়ক হিসেবে এতদিন পছন্দ করতেন। কিন্তু এবার হয়তো তারা একটু ক্ষুণ্ণ হতে পারেন। দেখুন একজন মানুষ তো পৃথিবীর সবাইকে খুশি করতে পারবে না। কিন্তু যাদের কাছে আমি রোল মডেল, তাদের জন্য তো আমাকে কিছু করতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তো সেটা আমার অধিকার।

প্রশ্ন: খুলনার ‘মাগুরা-১’ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশের নামি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে?

ফেরদৌস: এখনো কথা হয়নি। এমনিতেই আমরা খুব ভালো বন্ধু। সাকিব নিশ্চয়ই এখন তার কেন্দ্রে ব্যস্ত। মাশরাফিও আমার খুব ভালো বন্ধু। জাতীয় দলের দুই ক্যাপ্টেনই এখন জনপ্রতিনিধি হতে চলেছেন, এটা ভেবেই ভীষণ গর্ববোধ করছি। আশা করছি তাদের দুজনের সঙ্গেই জলদি দেখা হবে।

প্রশ্ন: আপনার মতে ভোটের মাঠে তারকা প্রার্থী দেওয়ার কী কী সুবিধা রয়েছে?

ফেরদৌস: মানুষটি তো ইতোমধ্যেই তৈরি। তাকে সবাই চেনেন। তার কাজ নিয়েও সবার একটা ধারণা থাকে। তাই অনেকটাই সুবিধা হয়। কলকাতাতেও তো অনেকেই অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতে রয়েছেন। আপনি ভাবমূর্তির কথা বলছিলেন। আমি যদি অন্যায়ের পথে যাই, তা হলে নিশ্চয়ই আমাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হবে। কিন্তু আমি ভালো কাজ করলে নিশ্চয়ই তখন আর ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। আসলে উদাহরণ দেওয়া খুব সহজ; কিন্তু উদাহরণ হয়ে ওঠা খুব, খুব কঠিন। আর আমি সব সময়েই চেয়েছি উদাহরণ হতে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *