নির্বাচন করে ফেললেও টিকবে না, বললেন পার্থ
নানা জল্পনা-কল্পনার পর গতকাল বুধবার তপশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি। ইতোমধ্যে ঘোষিত তফশিলকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপশিলকে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি সমমনা দলগুলো। সমসাময়িক নানা ইস্যুতে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে টকশোর আয়োজন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, ‘এই সরকার নির্বাচন করে ফেললেও টিকবে না।’
ব্যারিস্টার পার্থ বলেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ দাবি করে- দেশে তাদের ৩০ শতাংশ ভোট রয়েছে। অথচ তার মধ্যে থেকে ৫ শতাংশও ভোট দিতে আসছে না। সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫৩ সেকেন্ডে ৪৭ ভোট দেওয়া হলো, এটি কিন্তু জেতার জন্য দেওয়া হয়নি। এটি মূলত ৩০ শতাংশ ভোট দেখানোর জন্য দিয়েছে। এটি না করলে তো ২ শতাংশ ভোটও পড়ত না। আগামী নির্বাচনেও যদি বিএনপি অংশ না নেয়, তাহলেও একই কাণ্ড করবে আওয়ামী লীগ। এটি করে ৪০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি দেখাবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হতে পারে- হঠাৎ কেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইভিএম বাতিল করল আওয়ামী লীগ? কারণ হচ্ছে- ইভিএমে ৩০ শতাংশও ভোট কারচুপি করতে সক্ষম হয়নি আওয়ামী লীগ। এর কারণ রাতে সেখানে ব্যালট বাক্স ঢোকানো হয়নি। বর্তমানে নির্বাচনগুলোতে যখন বিএনপি বা বিরোধীদল থাকবে না, তখন প্রিসাইডিং অফিসার ব্যালট বাক্স এগিয়ে দেবে, আর আওয়ামী লীগের লোকজন ভোট দিতে থাকবে। তা ছাড়া তো ৪০ শতাংশ ভোট কাস্ট হবে না।’
এ সময় সরকারের উদ্দেশে পার্থ বলেন, ‘সরকারকে একটা কথা মনে রাখতে হবে- গণতন্ত্র হলো শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে একটা প্রক্রিয়া। সরকার যদি মনে করে থাকে যে, আমি ক্ষমতা ছাড়ব না, তাহলে এটি কিসের গণতন্ত্র? এখন যে অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে, বিএনপির ৫ হাজার নেতাকর্মী মারা গেলেও ক্ষমতা ছাড়বে না আওয়ামী লীগ। এমনভাবে ১৫ বছর চালিয়েছে, কোনো দিন ক্ষমতা ছাড়তে হবে না তাদের। এখন ক্ষমতা ছাড়ার কথা বললে পুরো সিস্টেম ভেঙে পড়বে। এ জন্য বারবার তারা বলছে- আমরা নির্বাচন করে ফেলব। আওয়ামী লীগ ভাবছে নির্বাচন করলেই আগামী ৫ বছর স্থায়ী হয়ে যাব। কিন্তু এটি সম্ভব না। সত্যি কথা বলতে- এখন আমরা, বিরোধীদল ও মিডিয়া বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছি।’
পার্থ আরও বলেন, ‘বর্তমান দেশের এই পরিস্থিতিতে আমি মনে করি, রাষ্ট্রপতি সংলাপের আয়োজন করুক। প্রয়োজনে তপশিল পেছানো হোক। এতে সংলাপের ফলের ইতিবাচক না হলেও অন্তত দেশে রাজনৈতিক নর্মগুলো বিদ্যামান থাকবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন দিয়ে সংলাপ করে লাভ হবে না। কারণ তার তো কোনো ক্ষমতা নেই। গ্রহণযোগ্যতা নেই। বর্তমানে দেশে রাজনীতিটাই বন্ধ হয়ে গেছে।’