Home সারাদেশ অবরোধে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ চায় জবি শিক্ষার্থীরা
নভেম্বর ৫, ২০২৩

অবরোধে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ চায় জবি শিক্ষার্থীরা

তৌকির আহমেদ, জবি প্রতিনিধি:
সারা দেশে আন্দোলন কর্মসূচিতে এবার দুইদিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। তাছাড়া জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে সারাদেশে অবরোধ চলাকালেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারকরা। তবে শিক্ষাথীরা চায় ক্লাস – পরীক্ষা বন্ধ থাকুক।
  ক্লাস – পরীক্ষা চলমান থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। অবরোধের মাঝেও দূর-দূরান্ত থেকে এসে ক্লাসে উপস্থিত হওয়া জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মনে করছেন অনেকেই। তাছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে সশরীরে ক্লাস করতে নারাজ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হল না থাকায় দূর থেকে ঝুঁকি নিয়ে এসে ক্লাস করাটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অনেকে।
প্রশাসন থেকে ক্লাস- পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা থাকলেও একাধিক বিভাগের চলমান সেমিস্টার পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে যানা যায়। এছাড়া অনেক বিভাগ অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
পরিবহন প্রশাসকের তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী বাস নিয়মিত চলার কথা রয়েছে। তবে নিরাপত্তার কারনে বাইরের জেলা থেকে আসা কিছু বাস বন্ধ রয়েছে।
অবরোধে ক্লাস পরীক্ষা চান কিনা জানতে চাইলে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিশাদ জানান,পড়াশোনা কিংবা অন্য যেকোনো কাজের আগে আমাদের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে। আমাদের হল নেই। সবাই ঢাকার বিভিন্ন যায়গায় মেসে থেকে ক্লাস করে। তাই আমাদের বড় একটা অংশ দূর থেকে ক্লাসে আসে, ফলে রাস্তায় অনেকে বিপদে পড়তে পারে না। নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রেণীকার্যক্রম বন্ধ চাই। প্রয়োজনে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
রসায়ন বিভাগের ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিফাত বিন হাবিব বলেন, আসলে আমরা জানি দেশব্যাপী একটি অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে , এমন অবস্থায় ক্লাস করা আমাদের জন্য ঝুঁকি হিসাবে মনে করছি এবং অনলাইন ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করার জন্য অনুরোধ করছি ,আমরা জানি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসেও হামলা হয়েছে, এমন অবস্থায় আসলে একটা ভয় থেকেই যায় যে রাস্তায় বের হলে বা বের হতে হলে আমার নিরাপত্তা আসলে কে দিবে ? তাছাড়া আমি নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বাসে আসা-যাওয়া করি “ধুমকেতু “ওই বাসটিও‌ অবরোধের সময় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এমন অবস্থায় আমার জন্য ক্যাম্পাসে পৌঁছানো যেমন একটি চ্যালেঞ্জ তার সাথে নিরাপত্তারও ব্যাপার।
তাই আমি চাই যদি আমাদের ক্লাস পরীক্ষা সচল রাখতেই হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রুটের সকল বাস সচল রাখতে হবে এবং যথাযথ নিরাপত্তা বজায় রাখা মাধ্যমে আমাদের ক্যাম্পাসে পৌঁছে দিতে হবে। অন্যথায়, অনলাইন ক্লাসের পরিকল্পনা করা উচিত তা যদি করা সম্ভব না হয় ক্লাস বন্ধ রাখা উচিত ।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজুল হাকিম আকাশ বলেন,হরতাল অবরোধের নেতিবাচক প্রভাব অন্যান্য শহরের চেয়ে ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশি।সেক্ষেত্রে এমতাবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রেখে কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।তাই জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নে অবরোধে ক্লাস পরিক্ষা চালু থাকার কোন যৌক্তিকতা দেখি না।
এবিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোস্তফা কামাল বলেন, অবরোধে ক্লাস-পরীক্ষা চলমান থাকবে। নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য পাশের থানায় বলা হয়েছে। তাছাড়া রাস্তায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। আশাকরি কোনো সমস্যা হবেনা। আমরা আমাদের ক্লাস পরীক্ষা চলমান রাখবো।
উল্লেখ্য, বিএনপির দেওয়া অবরোধে গত বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানের প্রধান ৩টি ফটকে ছাত্রদল কতৃক তালা দেওয়ায় ঘটনা ঘটে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *