Home অপরাধ পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্য মাদক মামলায় গ্রেপ্তার
Oktober ৩১, ২০২৩

পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্য মাদক মামলায় গ্রেপ্তার

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক সদস্যকে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। সাড়ে চার হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধারসংক্রান্ত মামলায় গত শনিবার ঢাকার মালিবাগ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই তাঁকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করে ডিএনসি। তবে ওই দিন শুনানি না করে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

মামলার নথি ও আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই এসবি সদস্যের নাম আজহার আলী (৩৮)। তিনি এসবির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। শুক্রবার সকালে মোহাম্মদপুরের একটি ভবনের ছাদে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিবিএনের তিন সদস্যের কাছে একটি ব্যাগ রেখে যান আজহার। তিনি গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে ব্যাগটি রেখে গিয়েছিলেন। ডিএনসির সদস্যরা ওই ব্যাগ তল্লাশি করে সাড়ে চার হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় আজহার এবং কক্সবাজারের বাসিন্দা চানুচিং চাকমাকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে ডিএনসি। পরদিন শনিবার মালিবাগের ফরচুন শপিং মলের সামনে থেকে আজহার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এজাহারে কোনো আসামির পরিচয় পুলিশ সদস্য বলে উল্লেখ করা হয়নি। মামলাটি তদন্তও করছে ডিএনসি। কোনো তথ্য জানার থাকলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’

ডিএনসির ঢাকা উত্তর অঞ্চলের উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, একটি মাদক মামলায় পলাতক হিসেবে আসামি করা হয়েছিল আজহার আলীকে। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তিনি এসবির সদস্য। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। এখনো রিমান্ড শুনানি হয়নি।

যেভাবে অভিযান ও গ্রেপ্তার
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর হয়ে একটি মাদকের চালান আসে মোহাম্মদপুরে। ওই চালান নিয়ে আসেন চানুচিং চাকমা (২৬) ও তাঁর সহযোগী এক নারী। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে চানুচিং চাকমাকে ওই দিন সকাল পৌনে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুরের আসাদ গেট থেকে আটক করা হয়। তাঁর কাছে কোনো ইয়াবা পাওয়া যায়নি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, চানুচিংয়ের সঙ্গে আসা ওই নারী চালানটি আজহার আলী নামের এক ব্যক্তির কাছে একটি পরিবহনের কাউন্টারে হস্তান্তর করবেন। ওই কাউন্টারে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিএনসির কর্মকর্তারা ওই কাউন্টারে গিয়ে পৌঁছান সকাল ১০টা ১০ মিনিটে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায়, ইয়াবার চালানটি ওই নারী আজহার আলী নামে এক ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করেন। তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আজহার আলী সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে কালো রঙের একটি ট্রাভেল ব্যাগ (ভ্রমণের সময় ব্যবহৃত ব্যাগ) নিয়ে মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব সড়কের একটি ভবনে প্রবেশ করেন। সাত মিনিট পর ১০টা ৩০ মিনিটে তিনি ব্যাগ ছাড়াই ওই ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ছয়তলা ওই ভবনের ছাদে তখন এসপিবিএনের তিন সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজহার আলী দেশের (গ্রামের) বাড়িতে যাবেন বলে একটি ট্রাভেল ব্যাগ রেখে চলে যান। আজহার আলীর পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়, তিনি একটি সরকারি সংস্থায় কর্মরত। ব্যাগটি তল্লাশি করে সাড়ে চার হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজহার আলী মাদকের কারবারে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে গণভবনের একটি ফটকে নিরাপত্তা পাস দেওয়াসংক্রান্ত কার্যক্রমের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে এসবির কার্যালয়ে নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদও করেন। ইয়াবা উদ্ধারের এক দিন পর ডিএনসির কর্মকর্তারা তাঁকে হেফাজতে নিয়ে আদালতে পাঠান।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *