ফরিদপুরে সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ফরিদপুরের মধুখালীতে সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে ১ কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার মামলাটি করেন দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক ইমরান আকন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতটি এতিমখানার অনুকূলে বরাদ্দ ১ কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা বাবুল আক্তার মোল্যা। অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেন ওই সাতটি এতিমখানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
মধুখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা বাবুল আক্তার মোল্যা পরস্পর যোগসাজশে উপজেলার খোদাবাসপুর মোমেজান নেচ্ছা মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শরীফের সহায়তায় প্রকৃত এতিম শিক্ষার্থীর চেয়ে অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫২ লাখ ৯২ হাজার টাকা, ভূষনা লক্ষণদিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের সভাপতি মোতালেব হোসেন ও ক্যাশিয়ার মোশারফ হোসেনের সহায়তায় অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।
এ ছাড়া মাকড়াইল মাজেদা খাতুন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি আবুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক রইচ মিয়ার সহায়তায় ১৯ লাখ ৩২ হাজার, ফয়জিয়া মুসলিম এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. মহিউদ্দিনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ১৬ লাখ ৪৪ হাজার, মধুখালী মহিলা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের সভাপতি জাহাঙ্গির মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. শহীদুল্লাহর সহায়তায় ১৬ লাখ ৩২ হাজার, গোন্দারদিয়া দারউস সালাম কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক আলম বিশ্বাস ও সাবেক সহসভাপতি হাফিজুর রহমানের সহায়তায় ১৩ লাখ ৮ হাজার এবং ব্যাসদী লাল বানু অরফানেজের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর ও কোষাধ্যক্ষ আলী আকবরের সহায়তায় ভুয়া এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫ লাখ ২২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম বলেন, সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে ১ কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহাসহ এতিমখানা ও মাদ্রাসার দায়িত্বরত ১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহার বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।